গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক আশিকুজ্জামান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্মবিষয়ক অডিট অধিদপ্তর। এমনকি প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম সম্পর্কে অবগত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপরও প্রকল্প পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বশেমুরবিপ্রবির রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ২০১৯ এর ১৭ জুলাই আশিকুজ্জামান ভুঁইয়াকে বশেমুরবিপ্রবি অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এরপরই এ প্রকল্পে ঘটে একের পর এক নিয়ম। চাঞ্চল্যকর এসব অনিয়মের বিষয় উঠে এসেছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্মবিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনেও।
ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া প্রকল্প পরিচালকে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিধিবহির্ভূতভাবে খুলনা শিপইয়ার্ডকে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি এবং আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ সর্বমোট ২৮ কোটি ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৯৯ টাকা আগাম প্রদান করেন। এসব পণ্যের একটি বড় অংশের চাহিদা না থাকায় বর্তমানে অব্যবহৃত থেকে নষ্ট হচ্ছে।
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্মবিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, গত বছরের ২৪ জুলাই আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে আলাদা অ্যাকাউন্ট খুলে ১ কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা সরিয়ে নেন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে জানাজানি হলে তড়িঘড়ি করে সেই টাকা ১৪ নভেম্বর আবার আগের অ্যাকাউন্টে ফেরতও দেন তিনি। এরপর সেই অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেন। এ ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানেনি প্রকল্প পরিচালক। তার এমন অনিয়মের কারণে প্রকল্পে লভ্যাংশ ক্ষতি হয়েছে দেড় লাখ টাকা।
একে নিয়মবহির্ভূত বলছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এসব অনিয়মের বিষয়ে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া কথা বলতে রাজি হননি।
তবে এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপ-পরিচালক (হিসাব) শেখ সুজাউদ্দিন বলেন, এতে আমাদের কোনো পরামর্শ ও নেওয়া হয়নি। আমাদের কাছে কোনো ফাইলও আসেনি। পরিকল্পনা, প্ল্যানিং ও ওয়ার্কস অফিস তাদের নিজ দায়িত্বে অ্যাকাউন্ট খুলে লেনদেন করেছে।
আর উপ-পরিচালক (প্লানিং) তুহিন মাহমুদ বলেন, সহকারী পরিচালক (হিসাব) আমার রুমে এসে বলেছিলান একটি অ্যাকাউন্ট খোলা লাগবে যৌথ একাউন্টে সিগনেচার দেওয়ার কথা। আমি পিডি ওদের কথায় সিগনেচার দিয়ে দিয়েছি।
বশেমুরবিপ্রবি অগ্রণী ব্যাংক শাখার তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক কার্তিক চন্দ্র মন্ডল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পিডির লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে লেনদেন করা হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না সেটা তিনি বলতে পারবেন।
অনিয়মের বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক এ কিউ এম মাহবুব বলেন, অনিয়মের এই বিষয়টি ইউজিসি জানে, দুদক জানে,সরকার জানে সুতরাং আমার বিশেষ কিছু করার নেই। বিষয়টা ওপর মহল অবগত না থাকলে আমি তাদের অবগত করতাম।
ভিন্নবার্তা ডটকম/এসএস