করোনা লকডাউনে পথ কুকুরদের সেবায় মেয়াদের ১০ বছর আগেই রেল থেকে স্বেচ্ছাবসর নিচ্ছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বড়বাজার স্টেশনের বুকিং সুপারভাইজার রাজদীপ মুখোপাধ্যায়।
সংবাদ প্রতিদিন জানায়, ট্যাংরাবাসী রাজদীপ ও তার স্ত্রী সৌমিকে এলাকাবাসী চেনে স্ট্রে ডগ ও ক্যাট কেয়ার গিভার হিসেবে।
আট বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তার কুকুর, বিড়ালকে সেবা করে চলেছেন। শুধু খাবার নয়, চিকিৎসা থেকে আশ্রয়- সবকিছুর ব্যবস্থা করেন ওই দম্পতি।
ৱ কলকাতা শুধু নয় শহরতলির কুকুর, বিড়াল বিপদগ্রস্ত হলে তাদের উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন তারা। শহরের বড় পশু চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রয়োজনে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন।
শুধু সেবাই নয়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত কুকুরকে সুস্থ করে তাদের ভালো আশ্রয় দিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন করেন দত্তক নেওয়ার জন্য। অগণিত পথ কুকুরছানাদের তুলে দিয়েছেন নানা পরিবারের হাতে।
কেন এই উদ্যোগ- এমন প্রশ্নে রাজদীপের জবাব, ‘ওদের দেখার আর ভালোবাসার কেউ নেই। খেতে না দিয়ে উপরন্তু মারধর করেন অনেক মানুষ। কিন্তু একটু খাবার আর ভালোবাসা পেলে না-মানুষের ভক্তির মাধুর্য যে কি তা বোঝা যায়। নিঃশর্ত প্রেম পাওয়া যায়। তাই এদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছি। সঙ্গে পেয়েছি স্ত্রীকে।’
তিনি বলেন, ‘আইটি কর্মী পায়েল আমাদের মতোই পশুদের ভালোবাসে। আমরা আট বছরের বেশি সময় ধরে সম্পূর্ণ নিজেদের খরচে এই পরিষেবা দিয়ে চলেছি। লকডাউন খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করতে হয়েছে অসংখ্য আহত ও অপুষ্টিতে ভোগা কুকুরকে।’
মোমিনপুরে এক ক্লিনিকে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা দিতে হয়েছে। দেনার পরিমাণ বাড়ায় রেলের চাকরি থেকে ১০ বছর আগেই অবসর নিচ্ছেন তিনি। রেল থেকে পাওনা টাকা পেয়ে শোধ করবেন দেনা।
বেসরকারি বহু পশুপ্রেমী সংস্থা নানা সাহায্য দিতে চাইলেও রাজদীপ সে পথে হাঁটতে চান না। তাদের কথায়, পেশাগত হলে ভালোবাসা থাকবে না। থাকবে প্রাপ্তির চাহিদা। তাই ও পথে চলতে নারাজ তারা।
রাজদীপের কথায়, পথ কুকুর নয়, পোষা কুকুর অবহেলিত হলে উপযুক্ত টাকা দিয়ে সেই অবলাকে ঘরে আনেন। এমন কুড়িটি কুকুর এখন তাদের বাড়ির সদস্য।
ভিন্নবার্তা ডটকম/এন