1. admin-1@vinnabarta.com : admin : admin
  2. admin-2@vinnabarta.com : Rumana Jaman : Rumana Jaman
  3. admin-3@vinnabarta.com : Saidul Islam : Saidul Islam
  4. bddesignhost@gmail.com : admin : jashim sarkar
  5. newspost2@vinnabarta.com : ebrahim-News :
  6. vinnabarta@gmail.com : admin_naim :
  7. admin_pial@vinnabarta.com : admin_pial :

১০ টাকা কেজি চাল বন্ধে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ

ভিন্নবার্তা প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০ ৭:৩৮ pm

১০ টাকা কেজি দরে ওএমএসের (ওপেন মার্কেট সেল) চাল বিক্রি কার্যক্রম স্থগিত করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ। তারা জানিয়েছেন, যে অজুহাতে খাদ্য মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি স্থগিত করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। জনসাধারণের ভিড় এড়াতে ওএমএসের চাল বিক্রি কার্যক্রমে শৃঙ্খলা আনার দায়িত্ব খাদ্য মন্ত্রণালয়ের। তারা এই কার্যক্রমে শৃঙ্খলা আনতে কোনও উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে হয় না। সাধারণ মানুষের ধারণা, আসলে ওএমএসের চাল চুরি বন্ধ করতে না পেরে সরকার এ ধরনের একটি জনবান্ধব কর্মসূচি স্থগিত করেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের রোজগার এখন বন্ধ। এ অবস্থায় তাদের সহায়তার জন্য সরকার ওএমএসের চালের দাম কমিয়ে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু করে। কিন্তু ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি না করে মজুত এবং সরকারি ত্রাণের চাল বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির খবরে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। চাল চুরির ঘটনায় বিভিন্ন এলাকার সরকারদলীয় নেতা ও কিছু জনপ্রতিনিধির সম্পৃক্ততা এবং তাদের গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে। এতে অনেকটাই বিব্রত সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলছেন, চাল চুরির ঘটনা ও বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতেই মূলত ওএমএস কর্মসূচি স্থগিত করেছে সরকার। যদিও প্রশাসন এসব ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে ত্রাণ বিতরণ ও ওএমএস কার্যক্রমের চাল বিক্রির অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে চাল চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

রাজধানীর কোনাপাড়ার বাসিন্দা মকবুল হোসেন একটি গার্মেন্টের অপারেটর। করোনার কারণে কারখানা বন্ধ। মার্চ মাসের বেতন পাননি এখনও। ধারদেনা করে চলছেন। এলাকার ভোটার নন বিধায় রিলিফ দেয়নি স্থানীয় এমপির লোকজন। ঘরে চাল থাকলে লবণ দিয়েও ক্ষুধা মেটানো যায় জানিয়ে মকবুল হোসেন জানান, ওএমএসের লাইনে দাঁড়িয়ে ১০ কেজি চাল এনেছিলাম দুই দফায়। তা শেষ হয়ে গেছে। আবার লাইনে দাঁড়িয়ে আনতে যাবো—এমন সময় শুনলাম চাল বিক্রি বন্ধ। এখন বাজার থেকে কিনতে হবে, কিন্তু এই মুহূর্তে সে পরিমাণ টাকাও সঙ্গে নেই। কীভাবে চলবে জানি না। ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।

মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সরকারের এই কর্মসূচি ছিল আসলেই জনবান্ধব। রিলিফ চাই না। এই কর্মসূচিটি আবার চালু করুক। ক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে লাইনের শৃঙ্খলা মানে না এটি ঠিক না, কেউ একজন দেখভাল করলেই লাইনে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব। এছাড়া রাস্তায় তো পুলিশ ও সেনাবাহিনীর লোক দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের একজন থাকলেই যথেষ্ট। কাঁচাবাজারে শৃঙ্খলা থাকলে এখানে শৃঙ্খলা আনা কঠিন কাজ নয়।’

এদিকে বরিশাল বিভাগের একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ওএমএস কর্মসূচির আওতায় চাল কিনতে আসা ক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব মানছেন না, এটি একটি ঠুনকো অভিযোগ। আসলে সরকারদলীয় লোকজন ও কতিপয় জনপ্রতিনিধি ওএমএসের চাল আত্মসাতের ঘটনায় সরকার বিব্রত। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকায় শত শত বস্তা চুরি যাওয়া চাল উদ্ধার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের হাতেই ধরা পড়ছে সরকারদলীয় স্থানীয় নেতা অথবা জনপ্রতিনিধি। বিষয়টি সরকারকে বিব্রত করেছে। ওএমএস কর্মসূচি স্থগিত করার এটিই আসলে উদ্দেশ্য।

এদিকে দেশের যেসব উপজেলায় ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল চুরির ঘটনা ঘটেছে, ওইসব এলাকার উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (টিসিএফ) সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। পাশাপাশি ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও ভিজিডির চাল আত্মসাৎকারী ডিলারদের জামানত বাজেয়াপ্ত ও ডিলারশিপ বাতিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রবিবার (১২ এপ্রিল) খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে বিশেষ ওএমএস (চাল/আটা), খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও ভিজিডি’র চাল বিভিন্ন ডিলার, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও গোডাউনসহ তাদের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় আত্মসাৎকৃত চাল জব্দ করে মামলা করছে। এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত কিংবা পরিকল্পিত চাল আত্মসাতের ঘটনা নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই ডিলারের জামানত বাজেয়াপ্ত এবং ডিলারশিপ বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, যেসব এলাকায় ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল চুরি বা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে, সেসব এলাকার উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে সাসপেন্ড করার জন্য ডিজিকে বলা হয়েছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পদাধিকার বলে এ সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব বিধায় তাকে ওই পদে রেখে তদন্ত করলে আসল অপরাধী ধরা পড়বে না। এ জন্যই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম জানিয়েছেন, ওএমএসের চাল দেওয়ার সময় লোকজন ভিড় করছেন। এতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা হচ্ছে না। তাই করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচাতে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে খুব শিগগিরই ভিন্ন ব্যবস্থায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে সাধারণ মানুষের জন্য ওএমএসের চাল বিক্রি শুরু করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

ভিন্নবার্তা/এমএসআই



আরো




মাসিক আর্কাইভ