
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজারে মুরগি ও মাছের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও সাধারণ ক্রেতার জন্য তেমন স্বস্তি আসেনি। বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, আর পাঙাশ মাছ ১৮০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, ব্রয়লারের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য কমলেও দেশি মুরগি ও অন্যান্য মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে বাজারে সামগ্রিকভাবে দাম এখনও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে রাজধানীর উত্তরার আজমপুর কাঁচাবাজার এবং মালিবাগ-বাড্ডা এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৭০-১৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ এবং দেশি মুরগি ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি পাতিহাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।
বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। পাইকারি পর্যায়ে দাম সামান্য কমেছে, খুচরা বাজারে এর প্রভাবও পড়েছে। তবে দেশি ও সোনালি মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আজমপুর বাজারের বিক্রেতা সালেক ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে ব্রয়লারের পাইকারি দাম ছিল কেজিপ্রতি ১৮০ টাকার ওপরে। এখন সেটা ১৫৫–১৬০ টাকায় নেমে এসেছে। তাই খুচরায় আমরা ১৭০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে খাবার আর পরিবহন খরচ না কমলে দাম আরও নামবে না।
মালিবাগ এলাকার বিক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, দেশি আর সোনালি মুরগির দাম অনেক দিন ধরেই একই জায়গায় আছে। ক্রেতারা এখন ব্রয়লারের দিকেই ঝুঁকছে কারণ সেটা তুলনামূলক সস্তা।
আর ক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত দামের কারণে এখন ব্রয়লার মুরগিতেই ভরসা রাখতে হচ্ছে। কারণ, ব্রয়লার ছাড়া অন্য সোনালি কিংবা পাকিস্তানি ছোট মুরগির দামও হয়ে যায় দ্বিগুণ।
বাজারে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা আজম খান বলেন, ব্রয়লার ছাড়া অন্য মুরগির দাম তো এখন হাতের নাগালে নেই। একটা ছোট সোনালি মুরগিই নিতে ৩৫০ টাকা লেগে যায়। সাধারণ মানুষ এখন শুধু ব্রয়লারেই ভরসা রাখছে। আবার মাসের শেষ। কোনো রকমে বাকি দিনগুলো চালিয়ে নিতে পারলেই হয়।
অন্যদিকে মাছের বাজারে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। বাজারে কেজিপ্রতি রুই মাছ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, শিং ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়, চাষের মাগুর ৫০০ টাকায়, কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় এবং তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও পরিবহন খরচ ও খামার পর্যায়ের মূল্য অপরিবর্তিত থাকায় দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
এমন অবস্থায় বিক্রেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই খুচরা বাজারে মাছের দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে।
মালিবাগ বাজারে মুরগি ও মাছ কিনতে আসা ক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, এখন তো ব্রয়লার আর পাঙাশের দাম প্রায় এক হয়ে গেছে। আগে মুরগি তুলনামূলক সস্তা ছিল, এখন দুটোর দামই ১৭০-১৮০ টাকার মধ্যে। বাজারে গেলে বোঝাই যায়, সব কিছুর দামই এক লেভেলে উঠে গেছে।
নাজমুল হক নামের আরেক ক্রেতা বলেন, আগে মুরগি কিনতাম কারণ দাম কম ছিল, এখন দেখি পাঙাশ আর ব্রয়লারের দামে কোনো পার্থক্য নেই। যেটাই নেই, খরচ এক।
এছাড়া, খুচরা বাজারে গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ১০০০-১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।