1. admin-1@vinnabarta.com : admin : admin
  2. admin-2@vinnabarta.com : Rumana Jaman : Rumana Jaman
  3. admin-3@vinnabarta.com : Saidul Islam : Saidul Islam
  4. bddesignhost@gmail.com : admin : jashim sarkar
  5. newspost2@vinnabarta.com : ebrahim-News :
  6. vinnabarta@gmail.com : admin_naim :
  7. admin_pial@vinnabarta.com : admin_pial :

স্মৃতি-বিস্মৃতি

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১ ১১:৩১ pm

তখন ১৯৭৭ সাল। মাইকে ভেসে আসছে মোহাম্মদ রফির সেই জনপ্রিয় গানটি “না না না, পাখিটার বুকে যেন তীর মেরো না, ওকে গাইতো দাও”।

ওর কন্ঠ থেকে এ গান কেড়ো না”। শিশুকালে গানটি খুবই মনে ধরেছিল। যতবার শুনতাম ততবরই নতুন মনে হতো। যাই হোক পরে বুঝলাম এখানে ম্যাজিক হবে। তাই প্রচার স্বরুপ মাইকে গান বাজানো হচ্ছে। বংকিরা গ্রামে ম্যাজিষ্ট্রেট নিখিলেশ্বর বসুর পুরানো যে বাড়িতে স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল (এখন সেখানে মতলেব জোয়ারদারের বাড়ি) সেখানেই প্যান্ডেল করা হয়েছে টিনের বেড়া দিয়ে। রাতে ছোট চাচা মরহুম অধ্যক্ষ আফসার উদ্দীন আহম্মেদের সঙ্গে ম্যাজিক দেখতে গেলাম। দারুন ব্যাপার তো! গ্রামের বুড়ো বুড়ো মানুষ কি ভাবে তিনি বাক্স বন্দি করে অনুষ্ঠানে হাজির করলেন ? আরো কত ম্যাজিক দেখালেন মন্টু মিয়া। তখন তার টগবগে বয়স। মাথা ভর্তি চুল। হ্যাসাগ লাইটের আলোয় ঝলমলে আর দারুন চেহারা ফুটে উঠেছে মন্টু মিয়ার।

সেই থেকে তার ভক্ত হয়ে গেলাম। আশপাশ গ্রামে যেখানেই মন্টু মিয়ার ম্যাজিক সেখানেই আমি। যাই হোক পাকিস্থানী আমলেও বংকিরা গ্রামের হাটখোলার পাশে যে বড় বটগাছ ছিল সেখানে নিয়মিত মন্টু মিয়ার ম্যাজিকের আয়োজন করতেন সে সময়কার গ্রামের তরুন যুবক মহিউদ্দীন বিশ্বাস ও আফসার উদ্দীনরা। এরপর কেটে গেছে কয়েক যুগ। করোনা মহামারী শুরুর আগে এক শীতের সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট প্রাঙ্গনে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মেলার আয়েজন করা হয়। সেখানে আমন্ত্রিত হন ম্যাজিশিয়ান শাহাকার আলী মন্টু। এক পা দু’পা করে স্টেজের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। দুর থেকে মনে হচ্ছিল অল্প বয়সী এক তরুন যাদু দেখাচ্ছে। উৎসুক মনে আরো কিছুক্ষন দাড়ালাম। তিনি নিজেকে বারবার অতি নগ্ন হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করছিলেন। আমার পাশে দাড়ানো এক পরিচিত ম্যাজিষ্ট্রেট মহোদয়কে উনার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি মন্টু মিয়া বলে জানান। মন্টু মিয়ার পুরানো চেহারার সঙ্গে কোন মিল খুজে পেলাম না। তাই একজন ভক্ত হিসেবে ম্যাজিক দেখতে থাকলা। তার ম্যাজিক দেখে আবারো মুগ্ধ হলাম। কি নিঁখুত যাদু। আগের চেয়ে অনেক শানিত ও দক্ষতায় পুর্ন । অনুষ্ঠান শেষে তার সঙ্গে পরিচয় হতেই তিনি আমার গ্রামের নাম শুনলেন। বংকিরার কথা শুনে তিনি সঙ্গে সঙ্গে আমার ছোট চাচা ও কমরেড মহিউদ্দীনসহ অনেক মানুষের কথা বললেন। তিনি জিজ্ঞেস করণে সেই কমরেডরা কি বেঁচে আছেন ? না সুচক জবাব পেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে মন্টু মিয়া বললেন সেই পাকিস্থান আমল থেকে তোমাদের গ্রামে যে কতবার গিয়েছি, তার হিসাব নেই। এখন আমার বয়স ৭৮ বছর।

অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম ম্যাজিশিয়ান মন্টু মিয়ার সঙ্গে আমার এই স্মৃতিময় ছবিটি দিয়ে একটি লেখা সাজাবো। কিন্তু আর হয়ে ওঠেনি। আজ এমন এক সময় লেখাটি লিখছি যখন তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। পরিবারের সদস্যরা তার দাফন কাফনের জন্য ব্যস্ত। আপনার এই চির বিদায় বেলায় শুধু এটুকুই বলবো ওপারে ভালো থাকুন ম্যাজিশিয়ান মন্টু।

ভিন্নবার্তা/এমএসআই



আরো




মাসিক আর্কাইভ