জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী : শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও রাস্তা অবরোধ করেছেন ৷আজ বুধবার দুপুরে স্কুলের গেটের সামনে এ অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হয় ৷
অভিযোগে জানা যায়,নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসাবে প্রতিমাসে ৭০ হাজার টাকা বেতন নেন বলে অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোঃ শফিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে। এমনকি পদ সভাপতি হলেও নিজেকে চেয়ারম্যান হিসাবে উপস্থাপন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার একই বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন প্রতিষ্ঠানটি কর্মরত শিক্ষকরা।
এদিকে এ পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের সাথে গভীর রাত পর্যন্ত মিটিং করে মৌখিকভাবে পদত্যাগের ঘোষ দেন সভাপতি শফিয়ার রহমান। কিন্তু পরেরদিন সেই ঘোষনা থেকে সরে এসে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের মাত্র একজন সদস্যকে সাথে নিয়ে তার পছন্দের কয়েকজন সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে ব্রিফিং করেন তিনি। ব্রিফিংয়ে নিজের বেতন নেওয়াসহ শিক্ষকদের অভিযোগের ব্যাপারে কিছু না বলে শুধু শিক্ষকদের সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয়ের জন্য শিক্ষকদের ওপর দোষ চাপিয়ে বক্তব্য দেন তিনি।
সূত্র জানায় , শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রবিধানমালা অনুযায়ী সভাপতি ও কমিটির সদস্যরা নিয়োগ পরীক্ষার সম্মানী ছাড়া অন্য কোনো পারিশ্রমিক নিতে পারবেন না। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতি ও কমিটির সদস্যরা যাতে নিজেদের ইচ্ছেমতো অর্থ লোপাট করতে না পারেন, সেজন্য ২০২৪ সালের প্রবিধানমালায় এই বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই নিয়মটি সভাপতি এবং কমিটির অন্যান্য সদস
সদস্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কিন্তু এ নিয়ম মানছেন না ওই প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি।
লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ফোরামের সহ-সভাপতি কাজী আসাদুজ্জান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি না মেনে সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোঃ শফিয়ার রহমান বেতন হিসেবে তিনি ৫৫ হাজার টাকা নেন ও পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ বাবদ ১৫ হাজার টাকা নেন। সবমিলিয়ে প্রতিমাসে ৭০ হাজার টাকা বেতন বিদ্যালয় থেকে ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে গ্ৰহণ করেন।
বেতন নেওয়া ছাড়াও জেলাপ্রশাসককে দেওয়া সভাপতির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগপত্রে বাণিজ্য, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির খরচের নামে অর্থ আদায়, প্রতিষ্ঠানের আয় লায়ন্স ক্লাবে ব্যবহার, প্রতিষ্ঠানের গাড়ী ব্যক্তিগতকাজে ব্যবহার করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ওই শিক্ষকরা। অপর দিকে শিক্ষকদের দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে আজ শিক্ষার্থীরা স্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ করে সভাপতির পদত্যাগ দাবী করেছেন ৷
বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মশিউর রহমানকে প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে চেয়ারম্যান সম্মোধন এবং তাকে প্রতিষ্ঠান হতে বেতন প্রদানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি ও বার বার বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির শফিয়ার রহমান এর সাথে একাধিকবার অফিস ও মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি ৷