1. admin-1@vinnabarta.com : admin : admin
  2. admin-2@vinnabarta.com : Rumana Jaman : Rumana Jaman
  3. admin-3@vinnabarta.com : Saidul Islam : Saidul Islam
  4. bddesignhost@gmail.com : admin : jashim sarkar
  5. newspost2@vinnabarta.com : ebrahim-News :
  6. vinnabarta@gmail.com : admin_naim :
  7. admin_pial@vinnabarta.com : admin_pial :

বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড দল

বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড দল
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩ ২:৪৯ pm

Ashes Series এর প্রথম টেস্ট ম্যাচ। টসে জিতে ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রথম দিনের ৭৮ তম ওভার শেষে ইংল্যান্ডের ৮ উইকেটে ৩৯৩ রানে ইনিংস ঘোষণা। অস্ট্রেলিয়ার মত শক্তিশালী বোলিং এর বিরুদ্ধেও প্রথম দিনেই ওভার প্রতি পাঁচ রান। ইনিংস ঘোষণার সময় উইকেটে তখনো জো রুট ১১৮ এবং রবিনসন ১৭ করে অপরাজিত, ৪৩ রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপ। প্রথম দিনের খেলার তখনও ১২ ওভার বাকি এবং এরপর আরও ৪ দিন বা ১২ টি সেশন তো পড়েই আছে।

প্রথা অনুযায়ী সুযোগ ছিল সব উইকেট না হারিয়ে দিনটি শেষ করার, ইনিংসটি কে বাড়িয়ে নেবার, কিছু মহামূল্যবান রান সংযোজনের। এমন তো নয় যে ম্যাচ ইতোমধ্যেই ইংল্যান্ডের হাতের মুঠোয়? অথচ সবাই কে অবাক করে ইনিংস এর সমাপ্তি টানা। ইংল্যান্ড কি ভুলেই গেল যে খেলাটি ৫ দিনের। ভুলেই গেল যে এই খেলার নিষ্পত্তি কেবল জয় পরাজয়ে নয়, অমীমাংসিত ভাবেও হতে পারে এবং হারের চাইতে সেটিও কম সম্মানজনক নয়!

Ashes Series কে ঘিরে ইংল্যন্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার চীর প্রতিদ্বন্ধিতার ব্যাপারটি আমাদের সবারই জানা। এই ক্রিকেট যুদ্ধে দুই দলের কেউই হারতে চায় না। ব্যাপারটির সাথে শুধু দলেরই নয়, রাষ্ট্রীয় সম্মানও জড়িত। হেরে গেলে মুখ দেখানো কঠিন হয়ে পড়ে। অথচ এমন একটি জীবন মরন ম্যচে ইংল্যান্ডের কি দারুন ঔদ্ধত্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। একবার ও ভাবল না এই আক্রমণাত্মক মানসিকতা বুমেরাং হয়ে আসতে পারে। চতুর্থ দিন শেষে কিন্তু সেই সম্ভবনা সত্যি সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়া তো এমন কোন তৃতীয় শ্রেণির দল নয় যাকে বলে কয়ে হারানো যায়। সদ্য ভারত কে হারিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের সেরা দলের তকমা নিয়েই তারা মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ডের। তা হলে?

“Offence is the best defense” এবং ‘Freedom of expression”, এই দুটি এখন ইংল্যান্ডের খেলার মূলমন্ত্র। ব্যাপারটি শুধু কাগজে কলমেই নয়, এটি তাদের চিন্তায় এবং চেতনায়ও। এর প্রস্তুতিও সুদূরপ্রসারী। সূচনাটি তাদের কোচ ম্যাক্যুলামের হাত ধরে যা এখন তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটেও ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে প্রত্যেকটি দলই এখন জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে খেলছে। এই ধারাটি এত দিন আমরা অস্ট্রেলিয়াতেই দেখে এসেছি, কিন্তু এখন ইংল্যান্ডও একই ধারা অনুসরণ করছে। বরঞ্চ বলা যায় অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় এক ধাপ এগিয়েই করছে। ম্যাচের যে কোন সময়ে যে কোন পরিস্থিতিতে সুযোগ থাকলেই দ্রুত রান করে প্রয়োজনে ইনিংস ঘোষণা এবং জয়ের চেষ্টা। এখানে ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। দলের প্রয়োজন মিটানো এবং সেই অনুযায়ী পারফর্ম করা খেলোয়াড়দের একমাত্র লক্ষ্য। কার কি রেকর্ড হল তা নিয়ে কারও মাথাব্যাথা নেই। তাদের এখনকার ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রত্যেকটি মুহূর্তই চ্যালেঞ্জিং। খেলোয়াড় হিসেবে টিকে থাকতে হলে এর মুখোমুখি হয়েই টিকে থাকতে হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রত্যেকেই নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করছে। এটি খেলোয়াড়দের নিজস্ব প্রস্তুতির ক্ষেত্রে করে তুলছে আরও দায়িত্বশীল এবং তারা শিখছে চাপের মুখেও কি ভাবে পারফর্ম করতে হয়। তারা আঘাত করবে প্রতিপক্ষের দুর্বলতম মুহূর্তে। সেই ভাবনা থেকেই হয়তো প্রথম দিনই চার সেশনের রান তিন সেশনেরও কম সময়ে তুলে নিয়ে দিন শেষে ক্লান্ত অস্ট্রেলিয়ার উপর চড়াও হওয়া, যদি দু একটা উইকেট নিয়ে তাদের আরও চাপে ফেলে দেয়া যায়।

অথচ, আমাদের ক্রিকেটের চিত্র কিন্তু একেবারেই ভিন্ন। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমরা এখনও সেই রক্ষণাত্মক মানসিকতা নিয়েই খেলতে অভ্যস্ত। উইকেটে টিকে থাকাটাই আমাদের কাছে মেধার লক্ষ্মণ। ব্যক্তিগত পারফরম্যন্সই এখানে মুখ্য। খেলা যা হয় তার বেশির ভাগই সিলেকশন ম্যাচের মত। তাই দলের প্রয়োজনে রিস্ক নেয়ার চাইতে ব্যক্তিগত অর্জন প্রাধান্য পায়। কারন দিন শেষে কতগুলি সংখ্যা পারফরম্যন্সের নির্ণায়ক হিসেবে কাজ করে। কতটা কঠিন পরিস্থিতিতে তা অর্জিত হয়েছে বা কারও মধ্যে স্বপ্রনোদিত হয়ে ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়ার ব্যতক্রমি মানসিকতা আছে কি না তা তুলনামূলক কমই গুরুত্ব পায়। এই কারনেই কায়িক পরিশ্রম হলেও মনস্তাত্ত্বিক অর্জন আমাদের প্রায় কিছুই হয় না। ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যখন জয়ের জন্য বা দলের জন্য খেলার প্রশ্ন উঠে, যখন প্রয়োজন হয় comfort zone এর বাইরে গিয়ে কিছু করার তখন ঘরোয়া খেলায় সফল অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না।

তবে ভরসার কথা হচ্ছে যে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট ম্যাচে আফগানিস্তানের সাথে আমরা তুলনামূলক আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছি। তবে এই ধারাটিকে sustainable এবং দীর্ঘমেয়াদি করতে চাইলে ঘরোয়া ক্রিকেটের পুনর্গঠন একান্ত অপরিহার্য।

লেখক : নাজমুল আবেদীন ফাহিম, সংগঠক, প্রশিক্ষক ও ক্রিকেট বিশ্লেষক।



আরো




মাসিক আর্কাইভ