সুনামগঞ্জে বৃষ্টি কম হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে পাহাড়ি ঢলে জেলার সবকটি ছোট বড় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে পাড় উপচে মানুষের বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়ে ঢুকে পড়ায় চরম ভোগান্তি পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়া পানিতে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জের ২১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে বন্ধ রয়েছে পাঠদানে কার্যক্রম।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা য়ায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জ উপজেলাসহ জেলার পাঁচ উপজেলার ২১৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ছাতকে ১৭২টি, দোয়ারাবাজারে ২৩টি, সদর উপজেলায় ২০টি এবং শান্তিগঞ্জে একটি বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর আরপিননগর পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সদর উপজেলার ২০ বিদ্যালয়ে ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়ে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
উত্তর আরপিননগরের বাসিন্দা সিরাজ মিয়া বলেন, ‘আমার ছোট ছেলে মিরাজ মিয়া উত্তর আরপিননগর পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। বর্তমানে তার বিদ্যালয়ের চারদিকে গলা পানি। এ পানি না কমা পর্যন্ত ছেলেকে বিদ্যালয়ে পাঠাবো না।’
ইব্রাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঢলের পানিতে বিদ্যালয় ডুবে গেছে। এখন পানি কবে কমবে আর ছেলে মেয়েরাই বা কবে বিদ্যালয়ে যাবে কে জানে। এ পানিতে শিক্ষার্থীদেরও পড়াশোনায় অনেক ক্ষতি হলো।’
পৌর শহরের তেঘরিয়া শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আরা ইয়াসমিন বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলের পানি বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেছে। বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও মালামাল আমরা সরিয়ে নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিভাবকরাও বন্যার পানির ভয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। সেই জন্য শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম আব্দুর রহমান বলেন, পাহাড়ি ঢলে ২১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৮টি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।
ভিন্নবার্তা ডটকম/এন