1. admin-1@vinnabarta.com : admin : admin
  2. admin-2@vinnabarta.com : Rumana Jaman : Rumana Jaman
  3. admin-3@vinnabarta.com : Saidul Islam : Saidul Islam
  4. bddesignhost@gmail.com : admin : jashim sarkar
  5. newspost2@vinnabarta.com : ebrahim-News :
  6. vinnabarta@gmail.com : admin_naim :
  7. admin_pial@vinnabarta.com : admin_pial :

ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক-পিকআপে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ

ভিন্নবার্তা প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪ ৮:০১ pm

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ কাটিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে ও পিকআপে করে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। গণপরিবহন সংকট, বাসে অতিরিক্ত ভাড়া ও টিকিট না পাওয়াসহ পথের ভোগান্তি নিয়েই তাদের কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে তাদের।

বগুড়ায় কাউন্টারগুলোতে ঈদ পরবর্তী বাসভাড়ার তালিকা সাঁটিয়ে ঢাকা রুটে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। পরিবহন মালিক সমিতি থেকে ঢাকার ভাড়া নির্ধারণ করা আছে নন-এসিতে ৫৫০ টাকা। নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারতি দামেই টিকিট বিক্রি করলেও অভিযোগ আছে কাউন্টারে টিকিট পাচ্ছেন না যাত্রীরা। সেখানে দায়িত্বে থাকা কর্তাদের অতিরিক্ত ৩০০-৪০০ টাকা দিলে তবেই মিলছে টিকেট। আবার যারা ভালো কোম্পানির টিকিট পাচ্ছেন না তাদের বাড়তি টাকা দিয়ে ভরসা রাখতে হচ্ছে লোকাল বাসের ওপরে। সেখানে জনপ্রতি টিকেটের জন্য গুণতে হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা।

এসি ক্ষেত্র বিশেষে ৪০০-৭০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এসিতে ৮০০ টাকার টিকেট এক হাজার ২০০ ও হুন্দাই এসির টিকেট ৫০০ টাকা বেশিতে এক হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাহাবুবার রহমান মিজান নামের একযাত্রী শ্যামলী পরিবহনে নন-এসির সাড়ে ৫০০ টাকার টিকিট কিনেছেন এক হাজার টাকায়। সিট ম্যানেজ করতে কাউন্টারে দায়িত্বরদের দিতে হয়েছে সাড়ে ৪০০ টাকা। এমনকি এ যাত্রীকে কোনো টিকিটও দেওয়া হয়নি।

আদিত্য আহসান নামের আরেক যাত্রীকে ৫৫০ টাকার টিকেট কিনতে হয়েছে ৮০০ টাকায়। অবশ্য তার টিকেটের গায়ে মূল্যে সাড়ে ৫০০ টাকায় লেখা ছিল।

ঠনঠনিয়া বাস কাউন্টারে হানিফ বাসের ব্যবস্থাপক কোরবান আলী বলেন, নন-এসি বাসের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সাড়ে ৫০০ টাকাই নেওয়া হচ্ছে। অতিক্তি বাসভাড়ার অভিযোগ সঠিক নয়। তবে ঈদে যানযটসহ নানারকম চাপ থাকায় এসি ও হুন্ডাইয়ের টিকেটের দাম বাড়ানো হয়েছে।

হাসান এক্সপ্রেস নামের একটি বাসের সহকারী রুবেল হাসান বলেন, ঈদে ঢাকামুখী বাসের সংকট আছে। যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি থাকায় ভাড়া হিসেবে জনপ্রতি ৮০০ টাকা চাওয়া হয়েছে। গাড়িতে উঠে কমবেশি করে ভাড়া নেওয়া হবে। এছাড়াও ঈদ যাত্রার ধীরগতি আর যানযাটের জন্য এসি বাসের খরচ বাড়তি হয় তাই টিকেটের মূল্যেও বেশি।

বাসের অতিরিক্ত ভাড়া ও টিকেট না পাওয়ায় ট্রাকে ও পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকায় ফিরছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। ফলে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মাটিডালি ও বাননী মোড়ে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বাড়ছে।

মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সকালের দিকে রাস্তা অনেকটা ফাঁকা থাকলেও বেলা ও রোদের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। গাড়ির চাপ বাড়লেও স্বাভাবিক রয়েছে এ মহাসড়ক। তবে অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি তীব্র গরম উপেক্ষা করে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপে করে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছেন মানুষ। ট্রাকে ও পিকআপে করে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর জন্য গুণতে হচ্ছে মাত্র ৩০০-৪০০ টাকা।

শহরের ছিলিমপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে ট্রাকে করে ঢাকায় ফেরার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তি। তাদের কেউ নরসিংদী শহরে আবার কেউ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বিভিন্ন কলকারখানায় চাকরি করেন। ট্রাকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা জয়পুরহাট জেলার গোবিনাথপুরের বাসীন্দা সুমন শেখ বলেন, খাদ্য প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠানে মাসিক ১৭ হাজার টাকা বেতনে কাজ করি। ঈদ আর বৈশাখ উদযাপনে বাড়ি এসেছিলাম। ভালো কোনো বাসে টিকেট নেই। লোকাল বাসে ঢাকায় যাওয়ার জন্য এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে।

মাটিডালি মোড়ে কথা হয় ট্রাকে করে ঢাকায় যাচ্ছে এমন কয়েকজনের সঙ্গে। তার মধ্যে আজমিরা জাহান নামে এক নারী বলেন, ঢাকার একটি গার্মেন্টসে কাজ করি। বেশি ভাড়া দিয়ে বাসে করে যাওয়া-আসা সম্ভব না। তাই কম খরচে ট্রাকে করে বাড়ি এসেছিলাম আবার ফিরছিও ট্রাকে করে। তবে যেভাবে কাঠফাটা রোদ উঠেছে এতে করে তাপদাহে অসুস্থ হয়ে পড়াটাও স্বাভাবিক।

ঢাকাগামী ট্রাক যাত্রী আব্দুস সালাম বলেন, বাসে ভাড়া বেশি আমরা সামান্য বেতনের চাকরি করি। তাই কষ্ট করে ট্রাকে করে কর্মস্থলে ফিরছি। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেক ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে। ফিরেও যেতে হচ্ছে ভোগান্তি নিয়ে। আমাদের। মহাসড়কে যানবাহনের ধীরগতি এবং যানজট না থাকলেও রোদে তীব্র গরম সহ্য করে ট্রাকে করেই ঢাকা ফিরছি।

বানানী মোড়ে গিয়ে দেখা যায় শতশত মানুষ বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। সবাই মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও ঢাকাগামী কোন বাসেই সিট পাচ্ছেন না তারা। এছাড়াও নামবিহীন কিছু কয়েকটিবাসে সিট থাকলেও টিকিট বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুণ দামে। এজন্য নিম্ন আর মধ্য আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান।

সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একজন রিফাত হাসান বলেন, মাত্র ৩০০ টাকায় পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকার গাবতলীত পৌঁছাতে পারবো। অসহনীয় গরম হলেও করার কিছু নেই। বাসে ৬০০ থেকে হাজার টাকার ভাড়া দিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।

ট্রাকচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বড় চাকার প্রতি ট্রাকে ৪০-৪৫ জন যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। পিকআপে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ জন। প্রতিজনের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা করে। তাদের গাবতলীতে নামিয়ে দেওয়া হবে। ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা হলেও নিম্নবিত্ত মানুষের একমাত্র অবলম্বন এ ট্রাকযাত্রা বলে উল্লেখ করেন দেলোয়ার।

শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আবুল ফয়সাল বলেন, ফিরতি ঈদযাত্রায় এখনও কোনো জানজটের সৃষ্টি হয়নি। তবে যানবাহনের চাপ আছে। ট্রাকে ও পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের পথেই নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সোমবার চারটি ট্রাক ও পিকআপের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
ভিন্নবার্তা ডটকম/এন



আরো




মাসিক আর্কাইভ