ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখায় হাফেজে কুরআন সংবর্ধনা ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ‍হাফেজদের ‍সংবর্ধনা দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখা সভাপতি এমএ জামান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও শাখা সেক্রেটারি এইচএমএস মাহমুদের সঞ্চালনায় আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শতাধিক হাফেজে কুরআনকে সম্মাননা ক্রেস্ট, পাঞ্জাবী পিস ও টুপি উপহার প্রদান করা হয়। প্রধান অতিথি হাফেজে কুরআনদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন ও দোয়া পরিচালনা করেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান বলেন, একজন হাফেজে কুরআনকে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখিরাতে অনেক সম্মানিত করবেন। তাই প্রত্যেক হাফেজকে ভালো আলেম হতে হবে এবং কুরআনের আহ্বান সমাজের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি আমি বিশ্বাস করি, পূর্ণ কুরআনকে হ্রদয়ে ধারণ করা মানুষগুলো যদি আল্লাহর জমিনে তার দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্র সেনানি হিসেবে ভুমিকা পালন করে তাহলে এই জমিনে কুরআনের বিজয় ঠেকিয়ে রাখার সাধ্য কারো নেই।

তিনি আরো বলেন, মিশরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসী, তিনি আপনাদের মত কুরআনের হাফেজ ছিলেন। তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। আপনাদের শুধুমাত্র কুরআনের হাফেজ হওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার সুযোগ নেই। আপনাদেরকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনাদেরকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনাদেরকে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আপনাদেরকে এদেশ পরিচালনার জন্য নেতৃত্বের যত অঙ্গন রয়েছে, সকল অঙ্গনে নিজেদেরকে উপনীত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এ দেশের মানুষদের ইসলাম ও জাহেলিয়াতের সংমিশ্রণ থেকে প্রকৃত ইসলামের দিকে আহ্বান করার জন্য আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আপনাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা রয়েছে। প্রত্যেকের যোগ্যতাকে সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের ইসলামের গবেষণার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে। নিজেদের আরো যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের যোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হলে আল্লাহ তায়ালা সহায়তা করবেন এবং সম্মান বৃদ্ধি করে দেবেন।

শাখা সভাপতি বলেন, ইসলাম পালন যেমন ফরজে আইন তেমনি তা প্রতিষ্ঠা করাও ফরজে আইন। আল্লাহ বলছেন, ‘ওয়াকিমুস সালাত’ মানে নামাজ কায়েম করো সেই আল্লাহই বলছেন ‘ওয়াকিমুত দ্বিন’ মানে দ্বীন-ইসলাম প্রতিষ্ঠা করো। এখন আপনি নামাজ কায়েম মানবেন কিন্তু ইসলাম কায়েম মানবেন না কেনো? দুইটাইতো সরাসরি আল্লাহর কথা, কোরআনের আয়াত। সমাজে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন। আর সমাজে ইসলাম প্রতিষ্ঠা একাকী সম্ভব নয়, দলবদ্ধভাবেই সেটা করতে হবে। আল্লাহ তায়া’লা সূরা ইমরানের ১০৪ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল যেন থাকে যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে; আর এরাই সফলকাম’। প্রত্যেককে ইসলামী দলকের অন্তর্ভুক্ত হয়ে সমাজে দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হবে। এই জন্য বলছি ইসলামী আন্দোলন করা ফরজ। আমি বলছি না, এ জন্য আপনাকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বা জামায়াতে ইসলামী করতে হবে। আপনি যেকোন একটা ইসলামী দলকে বেছে নিতে পারেন। যদি আপনার কোন দলই পছন্দ না হয়, তবে আপনাকে নিজস্ব একটা ইসলামী দল গড়ে তুলতে হবে। ছাত্রশিবির থেকে সেই দল উত্তম হলে আমরাই সেই দলে যোগ দিবো। আর এটাই ইমানের দাবী। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজে দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই, আপনারাও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথে দ্বীন প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করুন। মানুষ পরিচালিত সংগঠন হিসেবে আমাদের ভুল থাকতে পারে, আমাদের কোন কাজ আপনাদের অপছন্দ হলে পরামর্শ দিন।

ভিন্নবার্তা./এমএসআই