জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফমারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম নতুন টেপার হাট নামক স্থানে সোনালী বিড়ির মালিক সুনিল শাহ্, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩ অমান্য করে ঘনবসতি, হাট-বাজার, কৃষি ব্যাংক, ব্র্যাক, ইউপি পরিষদ, কমিউনিটি ক্লিনিকের মত গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সড়কের পাশে তামাক প্রক্রিয়াজাত করছে। একাজের জন্য ভাড়াকৃত গোডাউনের চাতালে মেশিন ও হাতের সাহায্যে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তামাকের পাতা ও ডাটা গুঁড়া করা হয। এসব বর্জ্যের ধুলা-ময়লা বাতাসের সঙ্গে মিশে গিয়ে মারাত্মক পরিবেশ দূষণসহ জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে
পড়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এলাকাবাসী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন প্রতিবাদ করেও ফল না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা বুঁকিপূর্ণ পরিবেশে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন।এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, কোমলমতি শিশু- কিশোর, বৃদ্ধ, গর্ভবতী মা। অনেকেই ফুসফুসে ক্যান্সার, হাঁপানি, শ্বাসকষ্টের মত জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, সোনালী বিড়ির মালিক দীর্ঘদিন যাবত ওই ঘনবসতি এলাকার সড়কের পাশে তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ গোডাউনের চাতালে তামাক
পাতা ও ডাটা মাড়াই করা বর্জের বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসে মিশে পরিবেশ দূষণ করছে। তামাক পাতা মাড়াই করার জন্য
মেশিন চালু হওয়া মাত্রই তামাকের গুড়া করা বজের্যর বিষাক্ত ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায় পুরো এলাকা। বিশেষ করে বাতাস যখন বেশি
করে প্রাবাহিত হয়, তখন তামাকের বজের্যর তীব্র গন্ধে পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ বাড়ীতে বসবাসসহ জীবনযাত্রা
দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। অন্যদিকে হাঁচি-কাঁশির মাঝে কোমলমতি শিশু কিশোররা ঠিকমত লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে পারছেনা। বাতাসের সঙ্গে উড়ে আসা তামাকের ধুলা-ময়লায় আশ পাশের এলাকার বাড়িঘর পাছপালা আস্ত আবরণে ঢেকে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য সু-রক্ষা ছাড়াইঅধিকাংশ নারী ও পুরুষ শ্রমিক গণ উন্মুক্ত পরিবেশে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা হামিদুর রহমান বাবু, মশিয়ার রহমান, জহুরুল হক বলেন, সড়কের পাশে তামাক পাতা মাড়াই করার বিষাক্ত ধুলা-ময়লার কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে বাসা বাড়িতে বসবাস করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। রাতে ঘুমানোসহ খাওয়ার সময় বমি আসে। খাবার গলা পার হতে চায় না। এবিষয়ে এলাকাবাসী জনস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে অনেক বার নিষেধ করলেও বিড়ির মালিক তা মানছেন না।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ শাখার সোনালী বিড়ির ব্যবস্থাপক ছাইদুর রহমানের কাছে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতির বিষয়ে ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, ছাড়পত্র আছে দেখানো যাবেনা।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি খোলামেলা পরিবেশে তামাক পাতা মাড়াই করার নিয়ম
নেই। কেউ করে থাকলে খোঁজ নিয়ে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভিন্নবার্তা ডটকম/এসএ