জাতীয়কবি কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যে,গানে উপমা উপমানে যে হারে প্রকৃতির সৌন্দর্য,সুষমা ব্যবহৃত হয়েছে ; কোরান,পুরাণ-মিথ এসেছে ; কল্পনায় এসেছে হাজারো চিত্রকল্প ; তা বাংলাসাহিত্যে অনন্য উদাহরণ হয়ে আছে।এখানে তাঁর একটি গান উল্লেখ করা গেলো–
“তিমির-বিদারী অলখ-বিহারী কৃষ্ণ- মুরারি আগত ঐ,
টুটিল আগল,নিখিল পাগল, সর্বসহা আজি সর্বজয়ী।।
বহিছে উজান অশ্রু-যমুনায়,
হৃদি-বৃন্দাবনে আনন্দ ডাকে,আয়,
বসুধা-যশোদার স্নেহ-ধার উথলায়,
কাল্-রাখাল নাচে থৈ তাথৈ।।
বিশ্ব ভরি উঠে স্বব নমো নমঃ,
অরির পুরি-মাঝে এলো অরিন্দম!
ঘিরিয়া দ্বার বৃথা জাগে প্রহরীজন,
কারার মাঝে এল বন্ধ-বিমোচন,
ধরি অজানা পথ, আসিল অনাগত,
জাগিয়া ব্যথাহত ডাকে,মা ভৈঃ”।।
ছন্দে সুরে,চিত্রকল্পে,ইতিহাসে,বাস্তবতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এমন আর একটি আগমনী গান,বাংলাগানের
জগতে দ্বিতীয়টি নেই।
সনাতন ধর্মীয় সংগীতে এটি ভক্তিরসের অনন্য উদাহরণ।
কংশ-কারাগারের নির্মমতা,নির্যাতনের মধ্যে কংশবধকারী শ্রীকৃষ্ণের অলোকিক মহিমায় আগমনের
মায়াবী চিত্রকল্প চোখের সামনে ফুটে উঠে।ভক্তহৃদয়কে
আপ্লুত করে।
কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায়,গানে হাজারো উপমা,উপমানের ব্যবহার এবং অজস্র চিত্রকল্পের সন্ধান মিলে।এখানে নজরুলের তুলনা একমাত্র নজরুল।