পেঁয়াজের পর এবার আদা নিয়ে শুরু হয়েছে অভিনব প্রতারণা। আসন্ন রমজান ও চলমান করোনার প্রাদুর্ভাবকে পুঁজি করে মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা আদা নিয়ে হরিলুট করছেন। এলসিতে আদার সবোর্চ্চ মূল্য ৯৭ টাকা। ওই আদা আমদানিকারকরা ঢাকার বিভিন্ন পাইকারী বাজারে বিক্রি করছে ২৩৫-২৪০ টাকা। যা খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ৯৭ টাকা আদা ভোক্তার কিনছেন ৩৫০-৩৬০ টাকায়।
বুধবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর শ্যামবাজারে অভিযান চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
অভিযান পরিচালনাকারী অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক (উপসচিব) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীতে আদার দাম বাড়ছে। বিষয়টি তদারকির করতে পুরান ঢাকার শ্যামবাজরে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে আদা আমদানিকারকরা শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণার প্রমাণ মেলে।
তিনি বলেন, অভিযানকালে শ্যামবাজারে ফয়সাল এন্টারপ্রাইজে মূল্য তালিকায় আদার দাম ২৩৫ টাকা লেখা দেখা যায়। তাদের কাছে ক্রয় মূল্যের রশিদ অর্থাৎ কেজিপ্রতি কিনতে কত টাকা পড়েছে সেটি দেখতে চাওয়া হয়। এসময় তারা ক্রয় রশিদ দেখাতে পারেননি। তারা বলেন চট্টগ্রামের আমদানিকারকরা আমাদের পণ্য দেয় আমরা তা কমিশনে বিক্রি করি। আমদানিকারক ২৩৫ টাকা কেজি বিক্রয় করতে বলেছেন- বলে জানান শ্যামবাজারের এ পাইকারি পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের ব্রাদার্স ট্রেডার্স ইন্টারন্যাশনাল থেকে ৪৫০ ব্যাগ আদা কিনেছে। রশিদ দেখাচ্ছে। কিন্তু রশিদে ব্যাগের সংখ্যা, পণ্যের ওজন, পরিবহন ভাড়া সব লেখা থাকলেও ক্রয় মূল্য লেখা নেই। এটিই শুভঙ্করের ফাঁকি। তারা মূল্য না লিখে ইচ্ছা মত দাম আদায় করছে।
অধিদফতরের এ কর্মকর্তা জানান, আমরা সরকারি পণ্য আমদানি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জেনেছি দেশের আমাদনিকৃত আদার সর্বোচ্চ এলসি মূল্য ৯৭ টাকা। তাই অভিযানকালে সরাসরি খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক ব্রাদার্স ট্রেডার্স ইন্টারন্যাশনালকে ফোন করে আদার দাম জানতে চাওয়া হয়। এ সময় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের এলসি আদার দাম পড়েছে কেজি ১০০ টাকা। খরচ নিয়ে দাম পড়ে ১১০ টাকা। তাহলে ২৩৫ টাকা কেন বিক্রি করছেন তার ব্যাখ্যা চাওয়া হলে কোনো সঠিক তথ্য জানাতে পারেননি। পরে আমদানিকারক ফোনে ফয়সাল এন্টারপ্রাইজকে আদার কেজি সবোর্চ্চ ১২০ টাকা নির্ধারণ করে দেন।
বেশি দামে পণ্য বিক্রির অপরাধে ফয়সাল এন্টারপ্রাইসকে ২০ হাজার টাকা এবং মেসার্স আয়নাল অ্যান্ড সন্সকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
একই দিন রাজধানীর মিরপুর শাহ আলী পাইকারি বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মাসুম আরেফিন। এ সময় অতিরিক্ত দামে আদা বিক্রর অপরাধে দশটি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৬০ টাকায়। মাসের শুরুতেই পণ্যটির দাম ছিল ১৫০-১৬০ টাকা। ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে আদার দাম বেড়েছে ১৫০-২০০ টাকা।
ভিন্নবার্তা/এমএসআই