1. admin-1@vinnabarta.com : admin : admin
  2. admin-2@vinnabarta.com : Rumana Jaman : Rumana Jaman
  3. admin-3@vinnabarta.com : Saidul Islam : Saidul Islam
  4. bddesignhost@gmail.com : admin : jashim sarkar
  5. newspost2@vinnabarta.com : ebrahim-News :
  6. vinnabarta@gmail.com : admin_naim :
  7. admin_pial@vinnabarta.com : admin_pial :
ডলুড়া গণসমাধি

৪৯ বছর পর পূর্ণ ঠিকানা পেলেন ৪৮ হিন্দু-মুসলিম মুক্তিযোদ্ধা

ভিন্নবার্তা প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ৭:৫১ pm

মুক্তিযুদ্ধের ৫ নম্বর সেক্টরের বালাট সাবসেক্টরের অধীনে সুনামগঞ্জের ডলুড়া মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান। ১৯৭১ সনে এই সাব-সেক্টরে প্রশিক্ষণ নিয়ে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হন বাংলার দামাল সন্তানরা। তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে এসে সমবেত হয়ে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। মাতৃভূমিকে হানাদারমুক্ত করার দৃপ্ত শপথে পরিবারকে না জানিয়ে অনেকেই যুদ্ধে এসেছিলেন। তাই তাদের যুদ্ধের খবর জানত না পরিবারের লোকজন।

দেশ স্বাধীন করে অনেকে বিজয়ের বেশে পরিবারের কাছে ফিরলেও সম্মুখযুদ্ধে শহীদ ৪৮ জন যোদ্ধাকে ডলুড়া সীমান্তে গণকবর দেন মুক্তিযোদ্ধারা। অনেক স্বজনরাও জানতেন না শহীদ স্বজনের কথা। মুক্তিযুদ্ধে সেই শহীদদের গণসমাধি স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর দৃষ্টিনন্দন উন্নয়নের মাধ্যমে সংস্কার করে তাদের পূর্ণাঙ্গ পরিচয়ফলক লাগানো হয়েছে। শহীদ স্বজনদের নিয়েই গত ৪ সেপ্টেম্বর সেই সংস্কারকাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর শহীদের স্বজনরা স্বজনের কবরে অশ্রুসিক্ত হয়েছেন। শুকিয়ে যাওয়া চোখে জলের ধারা বইয়ে দিয়েছেন তারা।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সনে বালাট সাবসেক্টরের যোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। তাদের মধ্যে ৪৮ জন শহীদের লাশ সংগ্রহ করে ডলুড়া সীমান্তে সমাহিত করেন সহযোদ্ধারা। ওই গণকবরে শুধু নম্বর ও নাম দিয়ে কবরগুলো কোনোরকম চিহ্নিত করা হয়েছিল। পরে সেখানেই পিলারের ওপর নম্বর ও কেবল নাম বসিয়ে মুক্তিসংগ্রাম স্মৃতি ট্রাস্ট কিছু কাজ করে।

ডলুড়া শহীদ মিনার এলাকায় ব্যক্তিগত অর্থায়নে কিছু সংস্কারকাজ করেন বাঁশতলা সাবসেক্টরের অধিনায়ক মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন এ এস এ হেলাল উদ্দিন। পরে বিভিন্ন সময়েও কিছু সংস্কার কাজ করা হয়। কিন্তু এতদিন শহীদদের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় উদ্ধার করে কবরে স্মৃতিফলক লাগানোর কোনো উদ্যোগ ছিল না।

গত বছর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও মুক্তিসংগ্রাম স্মৃতি ট্রাস্ট ডলুড়া গণকবরে সমাহিত সকল শহীদের পরিচয় উদ্ধারে উদ্যোগ নিয়ে দৃষ্টিনন্দন সংস্কারে হাত দেয়। মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান ও মালেক হোসেন পীর বিভিন্ন স্থান থেকে শহীদদের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা সংগ্রহ করে দেন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সংগৃহীত নাম-ঠিকানা ফলক বসিয়ে মার্বেল পাথরে খোদাই করে দেওয়া হয়েছে। সমাধিগুলোকে স্তরে স্তরে সুবিন্যাস্ত করে আকর্ষণীয়ভাবে বসানো হয়েছে। নির্মাণকাজ উদ্বোধনকালে ডেকে আনা হয়েছিল শহীদের স্বজনদের। তাদেরকে নিয়েই নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হয়।

এই শহীদ সমাধী সৌধের ফলকে ৪৮ জন শহীদের মধ্যে ৪৫ জন শহীদের পূর্ণ ঠিকানা সম্বলিত ফলক বসানো হয়েছে। তিনজনের কেবল নাম রয়েছে। গণসমাধিতে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ ৪২ জন মুসলিম যোদ্ধা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ছয়জন যোদ্ধাকে একই কবরে সমাধিস্থ করেছিলেন সহযোদ্ধারা। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে যারা লড়েছিলেন সেই কবরই যেন তাদের প্রতিনিধিত্ব করছে। ধর্ম-বর্ণ ভুলে একই কবরে সমাহিত আছেন বাংলার সর্বকালের শ্রেষ্ট সন্তানরা।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ডলুড়া শহীদ সমাধীসৌধ দৃষ্টিনন্দন কাজ শহীদের স্বজনদের দিয়েই উদ্বোধন করিয়েছি আমরা। ৪৯ বছর পর পূর্ণ ঠিকানা বসানো হয়েছে। কাজটি যাতে দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় হয় সবধরনের উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে।

ভিন্নবার্তা ডটকম/পিকেএইচ



আরো




মাসিক আর্কাইভ