করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের জালিয়াতির দায় নিতে চাইছেন না প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরী।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনা বলছেন, জেকেজির জালিয়াতির সঙ্গে তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীই জড়িত। তবে বিষয়টি তিনি জানতেন। আর সেটা স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানাকে জানিয়েছিলেন তিনি।
সাবরিনা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, সব জেনেও জেকেজি হেলথকেয়ারের জালিয়াতির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তারা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বলছে, সবকিছু জেনেও স্বাস্থ্য অধিদফতর কেন কোনো পদক্ষেপ নিল না তার উত্তর জানতে ওই দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এতে সাবরিনা সত্য না মিথ্যা বলছেন সেটিও প্রমাণ হবে।
এদিকে শুরু থেকে জালিয়াতির বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না বলছেন সাবরিনা। যখন জেনেছেন, তখনই প্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন। বরং তিনি নিজেই প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তাকে ব্যবহার করে আরিফ নমুনা সংগ্রহের কাজ পান। পরে আরিফ এই কাজে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে এসব কথাই বলছেন সাবরিনা।
বুধবার (১৫ জুলাই) গোয়েন্দা পুলিশ সাবরিনার স্বামী আরিফকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। এরপর রাতে স্বামী-স্ত্রীকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় সাবরিনা সব দায় স্বামীর ওপর চাপাতে চাইলে আরিফ বলেন, ‘আমরা দুজন একসঙ্গেই জালিয়াতির পথ বেছে নিয়েছিলাম। সবকিছু সাবরিনাই করেছে।’
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাবরিনা সব দায় স্বামীর ওপর চাপাতে চাইলেও অনেক প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারছেন না তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন বলেন, সাবরিনার রিমান্ড শেষ হলে আবার নতুন করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। তখন হয়তো আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। যেসব আসামি পলাতক রয়েছে, তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।