করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে সব শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্যবীমার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এজন্য একটি প্রকল্প হচ্ছে; তা বাস্তবায়ন ও নীতিমালা প্রণয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষকে সভাপতি করে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এটাই হবে এই ধরনের প্রথম পদক্ষেপ।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ডিনস কমিটির সভায় স্বাস্থ্যবীমার সিদ্ধান্ত হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, “শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতন, দায়িত্ববোধ সম্পন্ন ভাল গ্র্যাজুয়েট ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে এই স্বাস্থ্যবীমা সহায়তা করবে।
“অধিকন্তু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিংয়ের উন্নয়নে এ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সভায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।”
তবে এ বীমা প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের প্যাকেজ এবং মাথাপিছু কত টাকা প্রিমিয়াম দিতে হবে, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি সভায়।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি শিগগিরিই ন্যূনতম প্রিমিয়ামে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পেতে নীতিমালা প্রণয়ন করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে সদস্য থাকছেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন, চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবী, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ এবং ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা শেখ।
সভায় করোনাভাইরাস সঙ্কটে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার জন্য বাস্তবতার নিরিখে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদেরকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, “প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা তৈরির লক্ষ্যে বিভাগ বা ইনস্টিটিউট এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কী কী চাহিদা বা ঘাটতি রয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট ডিন/পরিচালকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রারের কাছে প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এই চাহিদা নির্ধারণ কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট ডিন বা পরিচালক সমন্বয় করবেন।”
যাদের যে সীমিত সামর্থ্য আছে, তা দিয়ে সম্ভাব্য ক্ষেত্রে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করলেই প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঘাটতি বা চাহিদা চিহ্নিত ও নিরূপণ করা দ্রুত ও সহজ হবে বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়।
সভায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং শিক্ষা কারিকুলাম উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
“সভায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১৭টি গোল ও ১৬৯টি টার্গেটের কোন কোনটি কোন বিভাগ বা ইনস্টিটিউট কিভাবে অর্জন করবে তার একটি ডাটাবেজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই ডাটাবেজ প্রণয়নে অনুষদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ডিন এবং ইনস্টিটিউটের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরিচালক সমন্বয় করবেন। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রেজিস্ট্রারের দফতরে এই ডাটাবেজ জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।”
গত ২৬ নভেম্বর ডিনস কমিটির সভায় এসডিজিকে বিবেচনায় নিয়ে কারিকুলাম উন্নয়নের অনুরোধ করা হয়েছিল। এখনও যারা সে নিরিখে কারিকুলাম উন্নয়ন করেননি তাদেরকে কারিকুলাম উন্নয়নের জন্য পুনরায় অনুরোধ করা হয়েছে সভায়।
এছাড়া সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির আসন সংখ্যা নির্ধারণে বিভিন্ন অনুষদ ও ইনস্টিটিউশনের ডিন বা পরিচালকদের সুপারিশসহ যাবতীয় তথ্যাবলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।