স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে অনুসরণ করে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারবে।
শনিবার সন্ধ্যায় প্রধান বিচারপতির নির্দেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে অনুসরণ করে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি/ব্যক্তিগণ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চীফ মেট্রাপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারবেন।
এ বিষয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রাপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট এজলাস কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবেন।
এতে বলা হয়, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রাপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ আবেদন দাখিল ও শুনানি কার্যক্রমের পদ্ধতি ও সময়সূচি এমনভাবে নির্ধারণ ও সমন্বয় করতে হবে যাতে আদালত প্রাঙ্গণে এবং আদালত ভবনে কোনোরুপ জনসমাগম না ঘটে। আদালত প্রাঙ্গনে এবং এজলাস কক্ষে প্রত্যেককে কমপক্ষে ৬ ফুট শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল প্রকার জনসমগম পরিহার করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, উপরোক্ত আদালত জনসমাগম এড়াতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক আত্মসমর্পণ দরখাস্ত শুনানির জন্য গ্রহণ করবেন। এ সংক্রান্তে একটি তালিকা সম্বলিত বিজ্ঞপ্তি আদালত এবং আইনজীবী সমিতির নোটিশ বোর্ডে প্রচারের ব্যবস্থা করবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একটি মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে সর্বোচ্চ দুইজন আইনজীবী শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এজলাস কক্ষে একত্রে ছয় জনের অধিক লোকের সমাগম করা যাবে না। তবে একই মামলার একাধিক আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তি থাকলে এজলাস কক্ষের ডকে সর্বোচ্চ ৫ জন অভিযুক্ত ব্যক্তি অবস্থান করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট উক্তরুপ মামলা একাধিক ভাগে/ সেশনে শুনানি করতে পারবেন। সম্পূর্ণ শুনানি সম্পন্ন করে আইনানুগ আদেশ প্রদান করবেন। মামলা শুনানির সময় এজলাস কক্ষের বাইরে আদালতের বারান্দায় বা করিডোরে জনসমাগম সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ।
আত্মসমর্পণ দরখাস্ত শুনানির সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং তার পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী ব্যতীত অন্য কোনো আইনজীবী এজলাস কক্ষে অবস্থান করবেন না। একটি আত্মসমর্পণ দরখাস্ত শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী এজলাস কক্ষ ত্যাগ করার পর ম্যাজিস্ট্রেট পরবর্তী আত্মসমর্পণের দরখাস্ত শুনানির জন্য গ্রহণ করবেন।
এজলাস কক্ষে প্রত্যেককে অবশ্যই মুখে মাস্ক পরে থাকতে হবে। আদালতে প্রবেশের সময় প্রত্যেক ব্যক্তির তাপমাত্রা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।
এজলাস কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ শারীরিক দূরত্ব কঠোরভাবে বজায় নিশ্চিতকরণার্থে তাৎক্ষণিক উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি বিবেচনায় ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজনবোধে আত্মমর্পণ দরখাস্ত শুনানি করা হতে বিরত থাকাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। আদালতের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার্থে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনাক্রমে বর্ণিত বিষয়ে পূর্ণ সহায়তার জন্য আইনজীবীসহ সকলকে অনুরোধ করা হল।
চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রাপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বর্ণিতমতে স্বাস্থ্যবিধিসহ শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ নিশ্চিতকরণের নিয়মাবলী প্রতিপালনসহ সার্বিক পরিস্থিতি সংক্রান্তে একটি প্রতিবেদন প্রতিসপ্তাহের বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে ইমেইলের মাধ্যমে প্রেরণ করবেন। এই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ প্রদান না করা পযন্ত বলবৎ থাকবে।