মহামারি করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগে স্বাস্থ্যবিধির অজুহাতে বিপর্যস্ত জনগণের ওপর লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির পায়তারা বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দীর্ঘ সাধারণ ছুটি ও সীমিত আকারে জরুরি সেবাদানকারী অফিস খোলা রাখায় করোনা মহামারিতে কর্ম হারিয়ে নিদারুণ আর্থিক সংকটে থাকা জনগণের ওপর বর্ধিত লঞ্চ ভাড়া চাপিয়ে দেওয়া হলে “মরার উপর খাড়ার গাঁ” এ পরিণত হবে। যা দরিদ্র-পীড়িত জনগণের ওপর এই মহাসংকটে জুলুমের শামিল হবে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, যেকোনো সংকটে বা অজুহাতে দেশে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ালে তা স্বাভাবিক সময়েও কমানোর সক্ষমতা সরকারের নেই। দেশের ইতিহাসে দীর্ঘ ছুটিতে থাকা ও সীমিত আকারে জরুরি সেবাদানকারী অফিস খোলা রাখায় করোনা মহামারিতে কর্ম হারিয়ে সাধারণ মানুষজন এখন এক ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পতিত। জনগণের জীবন-জীবিকা আজ ভয়াবহ অনিশ্চয়তায় পতিত। দিশেহারা সাধারণ গরীব মানুষজন তার শেষ সম্বলটুকু দিয়ে কোনো রকমে বেচেঁ থাকার জন্য সংগ্রাম করছে।
তিনি আরও বলেন, কর্ম না থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলো থেকে গ্রামে ছুটছে। ইতিমধ্যে বাসের ভাড়া এক লাফে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে গণপরিবহনগুলো চরম যাত্রী সংকটে পড়েছে। লঞ্চে এখনো স্বাস্থ্যবিধি না মেনে প্রায় প্রতিটি রুটে গাদাগাদি করে যাত্রী বহন অব্যাহত রয়েছে।
‘পৃথিবীর ২০৫টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত হলেও কোনো দেশে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর নজির নেই। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও বাস-লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির জন্য মালিকদের পাতানো ফাঁদে পা না দিয়ে সে দেশের সরকার কঠোরতম অবস্থান নেওয়ার কারণে কোন পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি। তাই এসব দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে স্বাস্থ্যবিধির অজুহাতে লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির পায়তারা জরুরি ভিত্তিতে বন্ধের দাবি জানাচ্ছি’ যোগ করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। একই সঙ্গে এই সংকটকালে লঞ্চ ও ফেরিঘাটে টোল-ইজারা বন্ধ রাখার দাবি জানান যাত্রী অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনকারী এই নেতা।
বিশ্ববাজারে বহু আগেই তেলের দাম কমেছে দাবি করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, লঞ্চ পরিচালনার ক্ষেত্রে একমাত্র উপকরণ জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলে ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে গড় বোঝাইয়ের অর্ধেক যাত্রী নিয়েও লাভজনকভাবে যাতায়াত করা সম্ভব। তাই করোনা সংকটকালে গণপরিবহনের জন্য জ্বালানি তেল আমদানি মূল্যে সরবরাহ করে লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির পায়তারা বন্ধ করুন।
পাশাপাশি বাসের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে রাষ্ট্র ও সরকারকে দুর্যোগ কবলিত বিপর্যস্ত সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান সংগঠনের সভাপতি।
ভিন্নবার্তা ডটকম/এসএস