কৃষি উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখতে ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশে সার-বীজসহ কৃষি উপকরণের দাম না বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাভারের ব্র্যাক সিডিএম মিলনায়তনে সার্কভুক্ত দেশসমূহে টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) অর্জনে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন নেটওয়ার্ক (বায়েন) ও ভারতের পার্টিসিপেটরি রুরাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ সোসাইটি (প্রাডিস) যৌথভাবে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সম্মেলনে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের ৩৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের পলিসি হলো যে কোনো মূল্যে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা ও খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করা। সেজন্য, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার এই সময়ে যত কষ্টই হোক সরকার বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়ানো হবে না। অন্যান্য খাতে যে পলিসিই নেওয়া হোক না কেন, কৃষিখাতে বিশাল ভর্তুকি প্রদানসহ সকল সহযোগিতামূলক নীতি অব্যাহত থাকবে। এছাড়া কৃষি উৎপাদন টেকসই করতে যা যা করা দরকার, তা করা হবে।
আমনে বাম্পার ফলন হওয়ায় রেকর্ড পরিমাণ খাদ্য মজুত আছে। দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ফসলের গবেষণা ও সম্প্রসারণের মধ্যে বিরাট গ্যাপ রয়েছে। গবেষকদের উদ্ভাবিত জাত যেটি গবেষণা পর্যায়ে বিঘাতে ৮ মণ উৎপাদন হয়, সেটি সম্প্রসারণের পর কৃষক পর্যায়ে দেখা যায় উৎপাদন হয় বিঘাতে ৩-৪ মণ। এটি কেন হবে? এই বিশাল গ্যাপ কমিয়ে আনতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ফসলের উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি খুবই ধীরে কৃষকের কাছে পৌঁছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি ধান, সরিষাসহ অনেক ফসলের কতগুলো উন্নত উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন। এদের মধ্যে লবণসহিষ্ণু জাতও রয়েছে। কিন্তু এগুলো মাঠে কৃষকের কাছে যাচ্ছে খুবই দেরিতে। এতো দেরিতে মাঠে যাওয়ার কারণ কী? তা সম্প্রসারণকর্মীদের খুঁজে বের করতে হবে। সম্প্রসারণকর্মীদেরকে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে।
দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ শিল্পায়নের ফলে কৃষি জমি কমে যাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষি জমি রক্ষায় আমাদের দেশে আইন থাকলেও এর বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এছাড়া কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহারের বিষয়টিও জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনকে উৎসব হিসেবে নেয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বুধবার সারা দেশে ছয়টি সংসদীয় আসনের যে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেই নির্বাচনে বিরোধীদল অংশ গ্রহণ করছে না এবং জাতীয় নির্বাচনের মাত্র এক বছর বাকি থাকায় বর্তমানে ভোটারদের উপস্থিতি কম হচ্ছে। তবে জাতীয় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে এবং শতকরা ৭০ ভাগ লোক নির্বাচনে ভোট দেবে।
অনুষ্ঠানে প্রাডিসের সিনিয়র অ্যাডভাইজর ভিভি সাডামাতে, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি দানিয়েল গুস্তাফসন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন, বায়েনের সভাপতি হামিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সেকান্দর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন ভূইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ভিন্নবার্তা ডটকম/এন