প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আলোচনায় ‘লকডাউন’। আক্ষরিক অর্থে এটা শুধু আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, সঙ্গে আছে রাজ্যের বিভ্রান্তি। আজ যদি বলা হয় জোন চিহ্নিত করা পাকাপাকি, তাহলে কাল বলা হচ্ছে, জোন চিহ্নিতকরণ সম্পন্ন হয়নি। এভাবেই কেটে গেছে প্রায় অর্ধমাস। যে সাধারণ মানুষ লকডাউন কার্যকরে সরকারকে সাহায্য করবেন, তারা স্রেফ বিরক্ত। পাড়া-মহল্লায় খেদোক্তি শোনা যাচ্ছে, সব আক্রান্ত হওয়া সাঙ্গ হলে তবেই কি কার্যকর হবে লকডাউন?
কর্তৃপক্ষের মধ্যে এত সিদ্ধান্তহীনতা কেন, সেটাও একটা বড় জিজ্ঞাসাবোধক চিহ্ন হয়ে ঝুলছে। গত ১৫ জুন প্রথমে প্রজ্ঞাপন জারি করে বলা হলো, রেড এবং ইয়েলো জোনে সাধারণ ছুটি থাকবে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সেই প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বলা হয়েছ- ইয়োলো নয়, শুধু রেড জোনেই থাকবে সাধারণ ছুটি। করোনাকালে সিদ্ধান্ত দিতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের এমন নাজুক অবস্থান এর আগেও বেশ কয়েকবার দেখা গেছে।
প্রথমে একবার ঢাকার রেড জোন চিহ্নিত করা একটি মানচিত্র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলো। কিছুক্ষণ পর সেটি তুলে নেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হল, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন হয়নি, তাই এটি চূড়ান্ত নয়। তাহলে চূড়ান্ত করার আগে কেন প্রকাশ করা হল, তা নিয়ে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এরপর কয়েক দফা জোন ঘোষণা করা হল, কিন্তু বারবার বলেও প্রজ্ঞাপন জারি করা হচ্ছিল না। অবশেষে গত ১৫ জুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হল।
আনুষ্ঠানিক এই প্রজ্ঞাপনে বলা হল, ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লকডাউন কার্যকর করা হবে। কিন্তু আজ পাঁচদিন গত হচ্ছে, তেমন কোনো ‘আলামত’ দেশবাসী দেখতে পায়নি। এ নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। অনেকে সরকারের পক্ষ থেকে আয়োজন করে এমন বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।