রাত পোহালেই বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনে শুরু হচ্ছে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে কেন্দ্রগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পাঠানো হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বেলা ১১টার দিকে শহরের পৌর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সদর আসনের নির্বাচনি সরঞ্জাম বিতরণ শুরু করেন। প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা সরঞ্জামগুলো বুঝে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় কেন্দ্রে নিয়ে যান।
বগুড়া জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বগুড়া-৪ আসনে মোট কেন্দ্র ১১২টি। মোট ভোট কক্ষ ৭৭৭টি। ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন। এ আসনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ১১২ জন, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৭৭৭ জন ও পোলিং এজেন্ট এক হাজার ৫৫৪ জন। বগুড়া-৬ আসনে ভোট কেন্দ্র ১৪৩টি ও ভোট কক্ষ এক হাজার ১৭টি। এ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। এখানে ১৪৩ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, এক হাজার ১৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও দুই হাজার ৩৪ জন পোলিং এজেন্ট দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচনি সরঞ্জাম হস্তান্তরের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, বগুড়াবাসীকে শান্তিপূর্ণ, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ শুরু করেছে। বগুড়ার দুটি আসনের ভোটাররা নান্দনিকভাবে ভোট দেবেন।
দুই আসনের ২৫৫ কেন্দ্রের ১৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ
বগুড়ার ডিআইও-১ অফিস সূত্র জানায়, ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে। দুটি আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত লাখ। দুটি আসনের ২৫৫ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ১১৭টি সাধারণ।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে ১১২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৯টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ৩৩টি সাধারণ কেন্দ্র। এর মধ্যে কাহালুর ৬৩ কেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টি ঝুঁকিপূর্ণ। নন্দীগ্রামের ৪৯ কেন্দ্রের মধ্যে ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিন জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। ১৬ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাড়ে চার হাজার পুলিশ ও অন্যান্য ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে। গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতিটি কেন্দ্রে তিন জন পুলিশ ছাড়াও আর্মড পুলিশ, আনসারসহ ১৭ জন দায়িত্ব পালন করবেন। কেন্দ্রের বাইরে ও নির্বাচনি এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স ও বিজিবি সদস্যরা টহল দেবেন।
বগুড়া-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৯ জন প্রার্থী। এর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আসনটি ১৪ দলের শরীক জাসদকে (ইনু) ছেড়ে দিয়েছে। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাসদ প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন (মশাল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক বিএনপি নেতা কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল (কুড়াল), জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মোশফিকুর রহমান কাজলের (ট্রাক) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের (একতারা) মধ্যে।
বগুড়া-৬ (সদর) আসনে ১১ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে নৌকার প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান আকন্দ (ট্রাক), সাবেক বিএনপি নেতা সরকার বাদল (কুড়াল) ও জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমরের (লাঙল) মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
ভিন্নবার্তা/এমএসআই