মে দিবসে শ্রমিকদের কাজে বাধ্য করায় বিক্ষোভ করেছেন অভিনেতা অনন্ত জলিলের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। সাভারের হেমায়েতপুরে ঢাকা-মানিকগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে কয়েক হাজার শ্রমিক বিক্ষোভ করেছে।
আজ শুক্রবার সকালে সাভারের হেমায়েতপুরে অভিনেতা অনন্ত জলিলের মালিকাধীন এজেআই গ্রুপের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।
দীর্ঘসময় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চলাকালে লাঠিসোটা হাতে আরেক দল শ্রমিক এসে ধাওয়া করে তাদের। দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। লাঞ্ছিত হন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।
শ্রমিকদের অভিযোগ, তিনদিনের হাজিরা কাটা হবে; শ্রমিকদের এমন ভয় দেখিয়ে সরকারি ছুটির দিনেও কারখানায় আসতে বাধ্য করে মালিকপক্ষ।
কাজে যোগ দিয়ে বেশ কয়েকজন শ্রমিক বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানালে বেসরকারি সংবাদভিত্তিক একটি টেলিভিশনের সাংবাদিক সেখানে গেলে শ্রমিকরা কর্মস্থল ছেড়ে একযোগে বের হয়ে আসে সড়কে।
শ্রমিকরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করার সময় মালিকদের পক্ষ নিয়ে লাঠি হাতে তেড়ে আসেন আরেকদল শ্রমিক।
এ সময় দু’দল শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। তাদের ধাওয়ার মুখে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক লাঞ্ছিত হন।
একাধিক শ্রমিকের অভিযোগ, শিল্পাঞ্চলের অন্যান্য কারখানা খোলার আগেই গতমাসের ২১ তারিখে অভিনেতা অন্তত জলিলের হেমায়েতপুর এলাকার এজেআই গ্রুপের কারখানা খুলে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের স্বাস্থ্যকর মাস্কও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
শ্রমিকরা বলেন, আমাদের এখানে সাবান নয়, হুইল পাউডারের পানি দিয়ে হাত ধোয়ানো হয়। বাইরে থেকে কেউ যাতে বুঝতে না পারে সেজন্যে পেছনের ফটক দিয়ে শ্রমিকদের কারখানায় ঢোকানো হয়। কর্তৃপক্ষের মধ্য সারির কর্মকর্তাদের সামনেই এমন অভিযোগ করছিলেন শ্রমিকরা।
মে দিবসেও কারখানা খুলে দেবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ সাভার জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আরিফ। তিনি জানান, কেবল এজেআই গ্রুপই নয়, আজ এই শিল্পাঞ্চলে আরও পাঁচটি কারখানা খোলা রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিনেতা অনন্ত জলিলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গ্রুপের প্রধান মানব সম্পদ কর্মকর্তা জাহিদুল হাসান মীর জানান, করোনাভাইরাসে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্র (পিপিই) তৈরির জন্যে শ্রমিকদের কারখানায় আনা হয়েছিল। শ্রমিকরা কাজ করতে ইচ্ছুক নন এটা বোঝার সঙ্গে সঙ্গেই তারা কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছেন।
জাহিদুল হাসান মীর যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখনই শ্রমিকরা চিৎকার করে বলছিলেন, সবই মিথ্যা। ভেতরে যান। দেখেন আমাদের দিয়ে পিপিই নয়, গেঞ্জি ও প্যান্ট বানানো হচ্ছিল। পরে খবর পেয়ে ট্যানারি পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।