1. admin-1@vinnabarta.com : admin : admin
  2. admin-2@vinnabarta.com : Rumana Jaman : Rumana Jaman
  3. admin-3@vinnabarta.com : Saidul Islam : Saidul Islam
  4. bddesignhost@gmail.com : admin : jashim sarkar
  5. newspost2@vinnabarta.com : ebrahim-News :
  6. vinnabarta@gmail.com : admin_naim :
  7. admin_pial@vinnabarta.com : admin_pial :

মুক্তিকামী মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

ভিন্নবার্তা প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০২০ ১০:৫৬ pm
????????????????????????????????????

বৃটিশবেনিয়াদের শাসন,শোষণ, নির্যাতন ও নিস্পেষনের হাত থেকে মুক্তির দাবী ছিল হাজার বছরের। এই বাঙালী জাতি কোন দিন স্বাধীন ছিলনা। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য বাংলার হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নারী-পুরুষেরা মসজিদ মন্দির গির্জা প্যাগোডাতে প্রার্থনা করেছিল। বাংলার হিন্দু মায়েরা তুলশি তলায় বসে দেবাদিদেবের কাছে প্রার্থনা করে বলেছিল- প্রভু আমাদের রক্ষা কর, রক্তচোষা হায়নাদের হাত থেকে মুক্তি দাও। খ্রিষ্টান ভাইয়েরা গির্জায় দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রাথনা করে বলেছিল-বাংলামায়ের বুক থেকে রক্তের হলি খেলা বন্ধ কর ঈশ্বর। মুসলমানরা মসজিদ মাদ্রাসায় বসে দু’হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে বলেছিল-ইয়া আল্লাহ, বাংলার জমিনে এমন এক সূর্য্য সন্তানের জন্ম দাও, যে বাঙালী জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিতে পারে। আমাদের কর্ষ্টাজিত সম্পদ যেন ওরা লুন্ঠন না করতে পারে। এমনি এক সময় ১৯২১ সালের ১৭ মার্চ মুয়াজ্জিনের কন্ঠে যখন এশার আজানের ধ্বনি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছিল ঠিক তখনি জন্ম হল মহাকালের মহানায়ক, বাঙালী জাতির মুক্তির দূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের।

এই বাংলায় বিভিন্ন সময়ে অনেক নেতা জন্ম গ্রহণ করেছেন। দুদু মিয়া, ইলামিত্র, তিতুমীর, সূর্য্যসেন, হাজীশরিয়ত উল্লাহ, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী সহ অনেক নেতা নির্যাতিত মানুষের অধিকারের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন কিন্তু একটি শোষণ মুক্ত দেশ উপহার দিতে পারেনি। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলে ১৯৭১ সালের মহানমুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙ্গালি জাতির বহুদিনের কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণ হলো। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন র্সাবভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্থান হলো ।

তিনি বাঙালিদের একত্রিত করে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। এ কারণে তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। জনৈক বিশিষ্ট বৃটিশ সাংবাদিক বলেন, “Mujib is a magic world, Mujib is a miracle name” একজন জাতীয়তাবাদী নেতা হিসাবে তিনি বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৭১ সালের ০৫ এপ্রিল নিউজ উইক পত্রিকা বঙ্গবন্ধুকে poet of politics ‘রাজনীতির কবি’ আখ্যায়িত করে। ব্যক্তি জীবনে শেখ মুজিব ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্নেহধন্য। সোহরাওয়ার্দী বলেছিলেন- Mujib will one day create history ‘মুজিব একদিন ইতিহাস সৃষ্টি করবে’। শেখ মুজিব ছিলেন বিদ্রোহী বাংলার মূর্ত প্রতীক। তাঁর চরিত্রে ছিল বিদ্রোহী স্বত্তা। বাঙালিদের মধ্যে বিদ্রোহী চরিত্রের ব্যক্তিত্ব ছিলেন একমাত্র শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসু ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কোন শক্তির নিকট তারা মাথা নত করেননি।

বঙ্গবন্ধু জীবনের ১২ বছর কাটিয়েছেন জেলে। কিন্তু তিনি কখনও মুচলেকা দিয়ে মুক্তি চাননি। তিনি বলেছেন, জেল তাঁর মৃত্যু হলেও মুচলেকা দিয়ে জেল হতে বের হবেন না। ১৯৫০-৫২ সালে সরকার বারবার তাঁকে মুক্তি দিতে চেয়েছে। কিন্তু তিনি শর্ত মেনে মুক্তি চাননি। এ সময় মাওলানা ভাসানী ও শামসুল হক শর্ত মেনে মুক্তি লাভ করেন।

বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এই দুটো নাম এক সঙ্গে গাঁথা। একটি ছাড়া অন্যটি কল্পনা করা যায়না। বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ নামটি ঘোষণা করেছিলেন। ঢাকা হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা মাজার প্রাঙ্গনে সোহরাওয়ার্দী স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, “একসময় এদেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্ঠা হইতে বাংলা কথাটির সর্বশেষ চিহ্ন টুকুও চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হইয়াছে। একমাত্র বঙ্গোপসাগর ছাড়া আর কিছুতে বাংলা কথাটির অস্তিত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই। বাংলা ও বাঙ্গালীর অবিসংবাদিত গণনায়ক শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলার প্রতিও অমার্জনীয় অবজ্ঞা প্রদর্শিত হইয়াছে। বাংলার এইকৃতী দুই সন্তান আজ অসহায়ের মত আমাদের মুখের ওপর তাকাইয়া আছেন। এইদুই নেতার মাজারের পার্শ্বে দাঁড়াইয়া জনগণের পক্ষ হইতে আমি ঘোষণা করিতেছি-আজ হইতে পাকিস্তনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম হইবে পূর্বপাকিস্তানের পরিবর্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশ। (সূত্র:দৈনিক ইত্তেফাক,৬ ডিসেম্বর,১৯৬৯)

বঙ্গবন্ধু যখন ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে শুরু করল, তখন আবার ঐ পরাজিত শক্তি নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হল। দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রে ফলে ৭৫-এর ১৫ আগষ্ট কালোরাতে ঘাতকেরা জাতিরজনককে স্ব-পরিবারে র্নিমমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের নেতা ছিলেন না-তিনি দক্ষিণ এশিয়াসহ সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের আর্দশ ছিলেন। এই মহান নেতাকে স্ব-পরিবারে হত্যার ফলে বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক দুনিয়ায় অকৃতজ্ঞের দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বঙ্গবন্ধুকে বাঙ্গলী জাতি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে না পারলেও তাঁকে মূল্যায়ন করেছে পৃথিবীর অনেক জাতি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন অনুকরণ করে, বঙ্গবন্ধুকে আদর্শ বলে মনে করে পৃথিবীর অনেক নির্যাতিত নিপিড়িত জনগোষ্ঠী তাদের ন্যায্য অধীকারের জন্য সংগ্রাম করে চলছেন। তাদের কাছে একটি আদর্শের নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

শেখ মুজিবকে যদি কেউ মনে করেন তিনি শুধু শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পিতা, এটা ভুল। যদি আওয়ামী লীগ মনে করে তিনি তাদের নেতা তাদেরই সম্পদ এটাও ভুল। বঙ্গবন্ধু আজ বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের ধন। যেখানে বাংলা ভাষা আছে, বাঙ্গালীর বসবাস আছে, সেখানে তাকে সীমাবদ্ধ রাখার সুযোগ নেই। দিন যত বাড়ছে বঙ্গবন্ধু তত বিশাল হচ্ছেন। সময়ের গতি যতদ্রæত তার চেয়েও দ্রুত বঙ্গবন্ধুর অনুধাবন। সমুদ্র দেখলে সমুদ্র বড় হয় না-যে দেখে তার মন চিন্তা পরিকল্পনা বৃহৎ হয়। এ জন্যই সবাই বলে সুযোগ পেলে সমুদ্র দেখে আসো। আর আমি বলবো – মনের বিশালতা মানুষকে বৃহৎ হতে সাহায্য করে। যে বৃহৎ হতে চাইবে, মহান হতে চাইবে-তাকেই মনীষীদের জীবন দর্শন জানতে হবে। মুক্তিকামী মানুষের কাছে জাতির জনকের চেয়ে বড় মনীষী আর কে আছে!

লেখক: মো. গোলাম দস্তগীর
সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্রিমিনোলজিস্টস সোসাইটি
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, ইউজিসি অফির্সাস এসোসিয়েশন
E-mail: dostogir1971@gmail.com



আরো




মাসিক আর্কাইভ