সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, গত ১৫ বছর অনেক চেষ্টা করেও বিএনপিকে দমাতে বা দূর্বল করকে পারেননি। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে এমন কোনো নেতাকর্মী নেই যাদের নামে মামলা নেই। তবুও কেউ দল ছেড়ে যায়নি। বিএনপি ঐক্যবব্ধ থেকেই দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সায়েদাবাদ ব্রিজের ঢালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। চাল, ডাল, জ্বালানী তেল ও পরিবহন ভাড়াসহ সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রদলনেতা নূরে আলম, স্বে”ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জের যুবদল নেতা শাওন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এই কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিন বিএনপির ৭ নম্বর জোন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, নাজিমউদ্দিন আলম, গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আওয়ামীলীগের পেটুয়া বাহিনীকে বলতে চাই আপনাদের চিহ্নিত করে রাখছি। বেশিদিন সময় নাই, জনগনের সামনে আপনাদের বিচার হবেই। পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা, অনেক হয়েছে আর নয়। আর একজন নেতাকমীর ওপরেও হামলা করবে না। যারা বলে বিএনপিকে রাজপথে খুঁজে পাওয়া যায় না, তারাই ভয় পেয়ে অপানাদের বিএনপির বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছেন। তারা নিজেরোই পালানোর জায়গা পাবে না। সুতারাং সাবধান হোন।
মোশাররফ বলেন, এদেশে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, বিদুৎ ও জ্বালানী তেলের দাম এতো বেশি যা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। নিজেদের দূনীতির কারনে এসব কিছুই নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা সরকারের নেই। তিনি বলে, জনগণের ন্যায্য দাবি, দু’বলো দু’মুঠো খাবারের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছি। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামলীগ ৭৫ এ বাকশাল কায়েম করেছিলো, আজকে শেখ হাসিনার সরকারও বাকশাল কায়েম করতে চায়। তাই জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে সবাই মিলে রাজপথে নামলেই এই সরকারের পতন অনিবার্য।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, এই সরকারের সময় শেষ হয়ে এসেছে। অন্যায়, দুশাসন ও বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আমরা এক হয়েছি। সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যেই মুক্তিযোদ্ধারা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলো কোথায় সেই গনতন্ত্র? কেনো গনতন্ত্রকে করব দিয়ে বাকশাল কায়েক করে একদলীয় শাষন প্রতিষ্ঠার পায়তারা চলছে? কোনো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১ লক্ষ মামলা দেয়া হয়েছে?
মঈন খান বলেন, এ দেশের মানুষ খুব বেশি কিছু চায় না। তারা ৫ বছরের মাথায় কেন্দ্রে গিয়ে নিজের হাতে ব্যালটে নিজেদের ভোট দিতে চায়। কিন্তু সরকার প্রতিবারই আগের রাতে চুরি ভোটবাক্স ভর্তি করে ভুয়া সংসদ গঠন করেছে। তাই এবার তাদের প্রতিগত করতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই একটি নিরেপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার প্রতিষ্ঠা করে আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা বাঁশের লাঠি ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্পে জাতীয় পতাকা টানিয়ে মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসছেন। দুপুর ২টার কিছু সময় পর থেকেই সায়দাবাদ, যতিবাড়ী সহ আশ পাশের এলাবা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন এবং লাঠি ও স্ট্যাম্পে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকা টানিয়ে মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাবেশস্হলে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেড়ে যায়। এ সময় তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি ও সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। সমাবেশস্হলে আশপাশে পুলিশ ও র্যাব ব্যাপক উপস্থিতি ছিলো।
ভিন্নবার্তা/এমএসআই