বন্ধ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা মাসে যে মজুরি পেত তার চেয়ে বেশি টাকা মুনাফা হিসেবে ঘরে বসে পাবে। তবে এ টাকা প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর তুলতে পারবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা আমাদের পাটের যারা শ্রমিক, তাদের যে মজুরির টাকা পাওনা ছিল, সব মিটিয়ে… আমরা একবারে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা (বরাদ্দ দিয়েছি) তাদের জন্য…সেখানে সব টাকা তাদের হাতে দেব না। কারণ নগদ টাকা দিয়ে দিলে তখন দেখা যাবে মেয়ের জামাই, ভাই, ভাতিজা, আত্মীয়-স্বজন সব এসে হুমড়ি খেয়ে পড়বে এবং ভাগ চাইবে’।
তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি অর্ধেকটা সঞ্চয়পত্র করে দেব। পারিবারিক সঞ্চয়পত্র, যেখানে তারা ১১ শতাংশের মতো পাবে। সেখানে ভালো টাকা প্রতি তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক পাবে, যা প্রতিদিন সে কাজ করে মাসে মজুরি পেত, তার চেয়ে বেশি টাকাই পাবে। সেটা আমরা হিসেব করছি, যা পাওনা ছিল সেটা আমরা সব শোধ করে দেব।’
নতুন করে পাটকলগুলো চালুর পরিকল্পনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা এটাকে নতুনভাবে করব, এখানে যারা আগ্রহী তাদেরকে আমরা আবার ট্রেনিং দেব। ট্রেনিং দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন করে তাদেরকে তৈরি করব। পাটকল চালু হলে অভিজ্ঞতা যাদের আছে, তারাই নতুন করে চাকরি পাবে।”
বাংলাদেশ পাটের জন্মরহস্য উন্মোচন, গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন পাটজাত পণ্য আবিষ্কারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেগুলো আমাদের উৎপাদন করতে হবে। সেগুলো আমাদের দেশের কাজে লাগবে, বিদেশে রফতানি হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশ রক্ষার জন্য যেহেতু সিনথেটিক থেকে সকলেই এখন মুক্তি চায় সেখানে পাট হচ্ছে একটা বিকল্প। সেখানে আমাদের একটা বিশাল সম্ভাবনা বিশ্বব্যপী রয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে সময়োপযোগী করতে হবে, আধুনিক করতে হবে, নতুন করতে হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত যেসব পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, বিশ্বব্যাপী পাটের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সেগুলোকে সময়োপযোগী, আধুনিক করে গড়ে তোলার কথা জাতীয় সংসদকে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, নতুন আঙ্গিকে পাটকলগুলো চালু হলে অভিজ্ঞকর্মীদেরই সেখানে চাকরি হবে, এজন্য তাদেরকে আধুনিক প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণও দেয়া হবে।
দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে থাকা ২৬টি পাটকল সম্প্রতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য এসব পাটকলের প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিককে তাদের শতভাগ মিটিয়ে দেয়া হবে।