নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাসের পাইপ লাইনে আরও ত্রুটি আছে কিনা খতিয়ে দেখতে তৃতীয় দিনের মত মাটি খোঁড়া শুরু করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সকাল থেকে শ্রমিকেরা মসজিদের পূর্ব ও উত্তর দিকের সড়কে মাটি কাটার কাজ শুরু করেছেন।
তিতাস গ্যাস নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলাম জানান, “একটি পাইপলাইনে আরও দুটি ছিদ্র পাওয়া গেছে। পাইপলাইনের কোথাও আরও ছিদ্র আছে কি না, তা দেখতে মসজিদের পূর্ব ও উত্তর সড়ক খনন করা হচ্ছে। ওই সড়কের পুরো মাটি সরিয়ে নিলে কোথাও লিকেজ আছে কিনা সেটি দেখা হবে। ”
এলাকাবাসী জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিতাসের গ্যাসের শ্রমিকেরা বড় হাতুড়ি, হামার শাবল দিয়ে পাকা আরসিসি ঢালাই ভাঙা শুরু করে। মসজিদের সামনে স্তুপ করে রাখা মাটি সরিয়ে নিতে ভেকু লাগানো হয়েছে। ভেকু দিয়ে খোড়া মাটি দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে পশ্চিম তল্লা ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে তিতাস গ্যাস। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ওই এলাকার বাসিন্দারা। গ্যাস না থাকায় কেরোসিন স্টোভ, লাকড়ি, গ্যাস সিলিন্ডার, ইলেকট্রিক রাইস কুকারে রান্না করতে হচ্ছে তাদের। অনেককে বাইরে থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে।
তিতাস কর্মকর্তা মফিজুল আরও জানান, লিকেজের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার কাজে মাটি খোঁড়া হচ্ছে। যদি লিকেজের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায় তাহলে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মুসল্লি দগ্ধ হয়। এর মধ্যে রোববার ভোর পর্যন্ত এক শিশু এবং বাইতুস সালাত জামে মসজিদের ইমাম আব্দুল মালেকসহ ২৮ জনের মৃত্যু হয়।
বিস্ফোরণে মসজিদের ৬টি এসি জ্বলে গেছে এবং থাই জানালার কাঁচ বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। বৈদ্যুতিক শটসার্কিট ও পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ।
এই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, সিটি করপোরেশন পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির গণশুনানিতে ৪৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছে।
গত সোমবার পাইপলাইনে দুটি ছিদ্র পাওয়ার পর চার কর্মকর্তাসহ ৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
ভিন্নবার্তা ডটকম/পিকেএইচ