নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় গুমাই নদীতে বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় ট্রলার চালক সোহাগসহ ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ট্রলার ডুবিতে নিহত শিশু পুত্র রাকিবুজ্জামান,স্ত্রী লুৎফুনাহার ও নিখোঁজ কন্যা মনিরার বাবা আব্দুল ওয়াহাব বাদী হয়ে আজ কলামাকান্দা থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ট্রলার চালক সোহাগ মিয়া,বলগেট চালক আবু জাফর ও সহকারী এবাদুল,রিপন মিয়া,সোহাগ এবং বিপন মিয়াকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়।তাদের মধ্যে ট্রলার ও বলগেট চালকসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে কলমাকান্দা থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চত করে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজারুল করিম বলেন,আব্দুল ওয়াহাবের করা মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং দূর্ঘটনা কবলিত এলাকায় আর কোন লাশ উদ্ধার না হওয়ায় উদ্ধার কাজ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী নিখোঁজদের সন্ধানে ময়মনসিংহ ফায়ার সাভির্সের ডুবরী দলের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকলেও নদীতে প্রচন্ড স্রোত ও বৈরী আবহাওয়া খুজাঁখুজি করে নতুন করে আর কোন লাশ উদ্ধার না হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া মৃতরা হলেন,সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার মধ্যনগর থানার কামাউড়া গ্রামের শিশু আল মুজাহিদ-৩,টুপ্মা-৪,জাহিদ-আড়াই বছর,অনিক-৫,রাকিবুজ্জামান-২,মজিদা বেগম-৫১,সুলতানা-৪০,মোছাঃ লাকী বেগম-৩০,লুৎফুন্নাহার-২৫ ও নেত্রকোনা সদর উপজেলার মেদনী গ্রামের হামিদা বেগম-৫০।

বুধবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বরখাপন ইউনিয়নের রাজনগর গ্রাম সংলগ্ন গুমাই নদীতে বালুবাহী বড় নৌকার ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রলারটি ডুবে যায়। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থেকে সকালে প্রায় ৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি কলমাকান্দা হয়ে নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা যাওয়ার পথে এ দূর্গটনা ঘটে।

বালুবোঝাই বড় নৌকার ধাক্কায় ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এখন পর্যন্ত ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।ট্রলার ডুবির পর সা্তরিয়ে এবং ট্রলার থেকে আটজনকে উদ্ধার করা হয়। ট্রলারে থাকা যাত্রীদের ভাষ্যমতে ১০-১২ জন যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে ময়মনসিংহ থেকে ডুবরী দল ঘটনাস্থলে এসে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চালায়।নতুন করে আর কোন লাশ উদ্ধার হয়নাই।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মোঃ কাজী আব্দুর রহমান বলেন, ট্রলার ডুবির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদকে আহবায়ক করে কলমাকান্দা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানাকে সদস্য সচিব এবং থানার ওসি,ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক,উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।তারা যথারিতি কাজ করছে।

ভিন্নবার্তা/এসআর