চলতি বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। এদিকে ষষ্ঠ মাস শেষে দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে চার হাজার ছাড়িয়েছে।
করোনা রোগী শনাক্তের দীর্ঘ ৬ মাসে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলেও স্থিতিশীল রয়েছে। ষষ্ঠ মাসের শেষ দিকে কমতে শুরু করেছে শনাক্তের হার ও মৃত্যু।
পবিত্র ঈদুল আযহায় পশুর হাট এবং মানুষের ঘরে ফেরায় স্বাস্থ্যবিধির বালাই না থাকায় অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন ভাইরাসটির সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
বরং চূড়া থেকে নামতে শুরু করেছে করোনা। চতুর্থ ও পঞ্চম মাসের তুলনায় ষষ্ঠ মাসে করোনা শনাক্ত কম ছিল। এ সময় সুস্থতার হারও ছিল বেশি।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তাতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৫৫২ জন। সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ২৯ হাজার ২৫১ জনে।
আইইডিসিআরের হিসাব মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ৩ হাজার ২৩৬ জন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ ২ লাখ ২৭ হাজার ৮০৯ জন। গতকাল সোমবার ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ২০২ জনের করোনায় সংক্রমিত হওয়ার তথ্য জানানো হয়। ওই সময় মারা যান ৩৭ জন।
করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আগের চেয়ে ষষ্ঠ মাসে পরীক্ষা বেশি হলেও শনাক্ত রোগী কমেছে। মৃত্যু প্রায় সমান হলেও বেড়েছে সুস্থতার সংখ্যা।
দেশে ৯৩টি ল্যাবে (পরীক্ষাগার) করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আগের নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৭৩টি নমুনা। এর আগের দিন ১৫ হাজার ৪১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৭টি নমুনা।
এ মাসে মোট পরীক্ষা হয়েছে ৪ লাখ ৬ হাজার ৯০১টি। শনাক্ত হয়েছেন ৭৪ হাজার ৮৭৫ জন। মৃত্যু ১ হাজার ১৮৩ জন। সুস্থ হন ৭৮ হাজার ৯৮৯ জন।
দেশে পঞ্চম মাসে (৮ জুলাই-৭ আগস্ট) করোনা সংক্রমণ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ওই মাসেই দেশে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পঞ্চম মাসে দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৮৭ হাজার ৮৫৭ জন। এসময় মৃত্যু হয় ১ হাজার ১৮২ এবং সুস্থ ৬৭ হাজার ৪৮২ জন। এ মাসে মোট পরীক্ষা হয়েছিল ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩৪৩টি।
চতুর্থ (৮ জুন-৭ জুলাই) মাসেও শনাক্ত ও মৃত্যু বেশি ছিল। সে সময় শনাক্ত রোগী ছিল ১ লাখ ২ হাজার ৮৭৬ জন। মারা যায় এক হাজার ২৬৩ জন। এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে চতুর্থ মাসে। এসময় চার লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ৭ এপ্রিল পর্যন্ত সংক্রমণের প্রথম মাসে রোগী শনাক্ত হয় ১৬৪ জন, মারা যায় ১৭ এবং সুস্থ হন ৩৩ জন।
প্রথম মাসে মোট ৪ হাজার ২৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় মাসে (৮ এপ্রিল-৭ মে) রোগী শনাক্ত হয় ১২ হাজার ২৬১, মৃত্যুবরণ করেন ১৮২ এবং সুস্থ হন এক হাজার ৮৭৭।
এ মাসে মোট পরীক্ষা হয়েছে এক লাখ ১ হাজার ২২৪টি। তৃতীয় মাসে (৮ মে-৭ জুন) আক্রান্ত হয়েছে মোট ৫৩ হাজার ৩৪৪ জন।
এ মাসে মোট মারা যায় ৬৮৯ এবং সুস্থ হন ১১ হাজার ৯৯৩ জন। তৃতীয় মাসে নমুনা পরীক্ষা হয় ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৬৩টি।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯২৬ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯২ হাজার ৯৮২ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ কোটি ৫৯ লাখ ২২ হাজার ৮০ জন।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৩৪ জন। বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই দেশটিতে। এ নিয়ে এখানে ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫৭৫ জন এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৫টি দেশে ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।
ভিন্নবার্তা/এসআর