প্রতিদিনেই হু হু করে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। গেল এক সপ্তাহ পর আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে লালমনিরহাটের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা ও ধরলার নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ৫ উপজেলার নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। চরাঞ্চল ও তীরবর্তী গ্রামের ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
রোববার (১২ জুলাই) সকালে দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৫ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ মিটার) বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একেই সাথে ধরলা পয়েন্টে পানি বেড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
তিস্তার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফের পানিবন্দি হতে শুরু করেছে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলো। এসব অঞ্চলে বিগত বন্যায় শুরু হওয়া ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন।
আকমল, রহিমা, বাবু, মনির হোসেন জানান, গত ৫ জুলাই বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর শুক্রবার (১০ জুলাই) বিকেল থেকে পানি বেড়ে ফের বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। এখন ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে ফের দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার রাতে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারেজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে সকাল থেকে পানি কমে ১৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে পানি কমে যাবে। পানি নিয়ন্ত্রণ করতে ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও পানিবন্দি পরিবাররা যেন কষ্টে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।