প্রশাসনিক আমলাতন্ত্র দূর করার পাশাপাশি অপব্যয় হ্রাস এবং ফেডারেল সংস্থাগুলোকে আরও কর্মক্ষম করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগ’ নামে নতুন একটি মন্ত্রণালয় চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। সেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জয়ী করতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ককে।
বিভাগটিতে মাস্কের পাশাপাশি আরেক সহপ্রধান হিসেবে থাকবেন সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিবেক রামস্বামী। হোয়াইট হাউজের ভেতরে থেকে ট্রাম্প প্রশাসনকে আরও জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য চালু এই মন্ত্রণালয় সম্পর্কে মঙ্গলবার ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘মাস্ক ও রামস্বামী আমার প্রশাসনে সরকারি আমলাতন্ত্র, অতিরিক্ত প্রবিধান বাদ দেওয়া, অপব্যয় হ্রাস এবং ফেডারেল সংস্থাগুলো পুনর্গঠনের পথ প্রশস্ত করবেন।’
ট্রাম্প জানান, নতুন এই বিভাগ হোয়াইট হাউজ এবং ব্যবস্থাপনা ও বাজেট দপ্তরের সঙ্গে কাজ করবে। তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে সরকারে বড় আকারের কাঠামোগত সংস্কার এবং একটি উদ্যোক্তা পন্থা তৈরি হবে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।’
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে বুধবার হোয়াইট হাউজে আসেন ট্রাম্প। ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে যাবতীয় করণীয় সম্পর্কে তারা আলোকপাত করার কথা। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইস্যু (যা প্রকাশ্যে আনা সম্ভব হয় না) এ বৈঠকে প্রাধান্য পাবে বলে বুধবার স্থানীয় সময় সকালে জানা গেছে।
এদিকে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডেমক্র্যাট স্টেটগুলো আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে ২২ স্টেটের সমন্বয়ে নতুন একটি গ্রুপ গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইলিনয় স্টেটের গভর্নর জেবি প্রিটজকার এবং কলরাডোর গভর্নর জেয়ার্ড পোলিস বুধবার এ তথ্য গণমাধ্যমে দিয়েছেন।
তারা উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ডেমক্র্যাটিক পার্টির অধিক সমর্থকের স্টেটসমূহের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন। ফলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ অকার্যকর হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শুধু তাই নয়, নাগরিকের মৌলিক অধিকার হরণের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অভিবাসীদের রক্ত-ঘামে গড়ে ওঠা আমেরিকা তার মর্যাদা হারানোর মতো পরিস্থিতিতে নিপতিত হওয়ার আশঙ্কা ক্রমে প্রবল হচ্ছে।
ডেমক্র্যাট জোটের পক্ষে গভর্নর জেবি প্রিটজকার আরও উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্প তার প্রশাসনে এমন লোকজনকে আনছেন, যারা আইনের প্রতি নয়, তারা বিশ্বাস আর চেতনায় উজ্জীবিত। প্রথম মেয়াদে তিনি সত্যিই জানতেন না, তার প্রশাসনের মোটিভ কী ছিল। এখনো তিনি উপলব্ধি থেকেই সবকিছু করছেন। তাই আমার মনে হচ্ছে বর্তমানের হুমকি খুবই ভয়ংকর।
২২ ডেমক্র্যাট গভর্নরের এই জোটের কর্মপরিধি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো না হলেও এই দু’জনের নেতৃত্বে সকলে সোচ্চার থাকবেন। আওয়াজ উঠাবেন একসাথে। অভিবাসন-বিরোধী কট্টর পদক্ষেপসহ রাজনৈতিক বিদ্বেষী যে কোনো নির্দেশনা আইনগত লড়াইয়ে রুখে দেওয়াই হবে এ জোটের প্রধান লক্ষ্য বলে শোনা যাচ্ছে।