বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) সুপারিশে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে পাঁচ হাজার ৫৪ জনের পদায়ন শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দ্রুততার সাথে তাদের নিয়োগ দেয়ার পর আজ শনিবার (২ মে) থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে এ পদায়ন শুরু করেছে।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আগে নিয়োগপ্রাপ্ত নার্সরা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে পদায়নের জন্য তদবির করলেও এখন হাঁটছেন উল্টো। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে ঢাকার বাইরে তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ পেতে তদবির করছেন এখন। একশ্রেণির অসাধু নার্স নেতাদের মাধ্যমে ঢাকার বাইরে নিয়োগ পেতে ‘স্পিড মানি’র গোপন লেনদেনও শুরু হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে পাঁচ হাজার ৫৪ জনকে বিপিএসসি নিয়োগের সুপারিশ করার পর গত বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) সুপারিশপ্রাপ্তদের রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ মেধাতালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদফতরের নবম গ্রেড পর্যন্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ দানকারী কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা দশম গ্রেডের কর্মকর্তা। তাদের নিয়োগ দানকারী কর্তৃপক্ষ নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদফতর। এই অধিদফতরের মহাপরিচালক পদে একজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা থাকলেও রহস্যজনক কারণে নার্সদের পদায়ন করছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দীর্ঘদিন নার্সিং পেশার সাথে জড়িত একাধিক সিনিয়র নার্স ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক পদে একজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা থাকার পরও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নার্সদের পদায়ন অধিদফতরের মহাপরিচালককে অপমানের শামিল।
তাদের অভিযোগ, অধিদফতরের নার্সিং শাখার একজন উপ-সচিব নার্সদের যে কোনো নিয়োগ ও পদায়নের ছড়ি ঘোরান। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গোপনে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ ও পদায়নের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
তারা জানান, আজ ২ মে থেকে নতুন করে যে পাঁচ হাজার নার্স পদায়ন শুরু হয়েছে তাতেও এক শ্রেণীর দালাল নার্সের মাধ্যমে গোপনে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পদায়ন শুরু করেছেন ওই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এসব নার্সের নিয়োগ দানকারী কর্তৃপক্ষ নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতর কেন পদায়ন দেবে তা বোধগম্য নয়।
এ ব্যাপারে জানতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অনুবিভাগ) মোহাম্মদ শাহাদত হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
ভিন্নবার্তা/এমএসআই