দেশ-বিদেশ যেখান থেকেই হোক, গুজব ছড়ালে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সংবাদকক্ষে তথ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যসচিব কামরুন নাহার, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদ, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) মো. মিজান উল আলমসহ তথ্য মন্ত্রণালয় ও এর জরুরি সংস্থাসমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, দেশে যখনই কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা দুর্যোগময় পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন কিছু মানুষ গুজব সৃষ্টি করেন। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তারা জনগণের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করে জনগণকে ভয়ার্ত করার অপচেষ্টা চালান। এবং একইসঙ্গে একটি মহল এ ধরনের গুজব তৈরি করে সরকারকেও বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকেন।
সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ইতিমধ্যেই অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা এই কাজগুলো করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর। একইসঙ্গে আমাদের তথ্য অধিদফতর এই বিষয়গুলো নজরে রাখছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের যে গুজব প্রতিরোধ সেল রয়েছে সেই সেলের কর্মকর্তারাও আজকে এখানে আছেন। এ বিষয়গুলো আজকে আমরা আলোচনা করেছি। দয়া করে কেউ গুজব তৈরির চেষ্টা করবেন না।
বিদেশ থেকেও অনেক ধরনের গুজব তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশে যেসমস্ত বাংলাদেশি নানা কারণে আছেন তারা কিন্তু সবাই অত্যন্ত দেশপ্রেমিক। কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ যাদের দু’একজনকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে গুজব সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
গুজব সৃষ্টিকারীদের উদ্দেশে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা হয়তো মনে করছেন তারা বিদেশে আছেন বিধায় তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু তারা বাংলাদেশের নাগরিক সুতরাং বাংলাদেশের নাগরিক যেখান থেকেই অপকর্ম করুন না কেন, সরকার আইনগতভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে এবং তা করবে।
গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে যখন দেশের সমস্ত মানুষ ঘরের মধ্যে অবস্থান করছেন, তারা এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মানুষের কাছে সংবাদ পরিবেশন করার জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
‘আমি সব সংবাদমাধ্যমের সম্মানিত কর্মকর্তা ও সাংবাদিক ভাইবোনদের অনুরোধ জানাবো, আমাদের লক্ষ্য হবে জনগণ যাতে সঠিক সংবাদ এবং সঠিক তথ্য পায়। সংবাদের কাটতির জন্য আমাদের কেউ যেন জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বা বিভ্রান্তি তৈরি হয় এমন সংবাদ পরিবেশন না করেন’, বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী এ সময় দেশের ক্যাবল নেটওয়ার্ক পরিচালনাকারীদেরও ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এখন মানুষ টেলিভিশন দেখছে, টেলিভিশনের মাধ্যমে তথ্য পাচ্ছে এবং আপনারা কেবল নেটওয়ার্ক সঠিকভাবে পরিচালনা করছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাই। সেইসঙ্গে আপনাদের অনুরোধ জানাই, যাতে এই কেবল নেটওয়ার্ক পরিচালনায় ব্যত্যয় না ঘটে। কোথাও ব্যত্যয় ঘটলে প্রশাসনের সহায়তা গ্রহণ করুন।
সরকারের বেতার, টেলিভিশন, তথ্য অধিদফতর এবং গণযোগাযোগ অধিদফতর জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, সেজন্য অন্যান্য সরকারি এবং বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আমাদের এই প্রতিষ্ঠানগুলো চালু আছে এবং এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য আমি তাদের সবাইকেও ধন্যবাদ জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা আজকে বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি গণযোগাযোগ অধিদফতর ও তথ্য অধিদফতরের আঞ্চলিক বা মাঠ পর্যায়ে যারা কর্মরত, এ দুর্যোগে জনগণকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে তারা স্ব-স্ব অফিসে দায়িত্ব পালন করবেন।
ভিন্নবার্তা/এমএসআই