বাংলাদেশ সরকারের অনুদান পেতে যাচ্ছেন লেবাননে অর্থনীতির প্রভাব ও করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া হাজারো প্রবাসী। লেবাননের বাংলাদেশ দূতাবাসে এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে এমনটি জানান দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে লেবাননে যে সকল প্রবাসীরা কর্ম হারিয়ে এখন টাকার অভাবে অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে, সে সকল অসহায় প্রবাসীদের বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনায় দূতাবাস কর্তৃক খাদ্যের ব্যবস্থা করা হবে। মূলত যারা অসহায় যাচাই বাচাই স্বাপেক্ষে শুধুমাত্র তাদেরকেই এই সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন সকল প্রবাসীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রবাসীদের আকামা ও পাসপোর্ট নবায়ন প্রসঙ্গে চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স বলেন, (কোভিড ১৯) সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে, এতে বাংলাদেশও আক্রান্ত। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কারণে বাংলাদেশেও লকডাউন চলছে প্রায় শহর ও এলাকায়। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন অফিসসহ বর্তমানে প্রায় সব কার্যক্রম বন্ধ আছে। এ ধারাবাহিকতায় দেশ থেকে কোন পাসপোর্ট নবায়ন হচ্ছেনা। অপরদিকে লেবাননেও লকডাউনের কারণে যারা আকামা নবায়ন করতে পারছেন না, অথবা ছুটিতে দেশে গিয়ে ফিরতে পারেননি অথচ আকামা মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদের সকলকে আশ্বস্ত করেন তিনি বলেন, লেবানন জেনারেল সিকিউরিটির সাথে আলোচনা হয়েছে। এবিষয়ে জেনারেল সিকিউরিটি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন। আকামার মেয়াদ যাদের শেষ হয়ে যাবে কোন জরিমানা ছাড়াই তাদের আকামার নবায়ন করা যাবে।
লেবাননে আটকে পরা প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রবাসীদের দেশে ফিরতে অন্যান্য দেশের মত লেবানন সরকারের কোন চাপ নেই বা এবিষয়ে তাদের কোন আলোচনা- সমালোচনাও নেই। তবে যারা সেচ্ছায় দেশে ফিরতে দূতাবাসে নাম নিবন্ধন করেছেন, তাদের সময় স্বাপেক্ষে দেশে ফেরানো হবে। তিনি জানান, গত ১৯ মার্চ দেশে ফিরতে ১৮৮ জনের ফ্লাইট ছিল কিন্তু করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব এর কারণে ফ্লাইট বাতিল সহ বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর ইতিমধ্যে নতুন করে ১৭০০ জনের ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে লেবানন জেনারেল সিকিউরিটি। বিমান চলাচল স্বাভাবিক হলে তাদের দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া আবার শুরু করবেন বলে জানান তিনি।
প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, লেবাননে সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত কারফিউ চলাকালে কোন প্রবাসী যেন ঘর থেকে বাহিরে না বের হন। বাংলাদেশী অনেক প্রবাসী এদেশের নিয়মনীতি মানছেন না বলে সুষ্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এই সময় কোন রকম অনাকাংখিত দুর্ঘটনা ঘটলে লেবানন সরকার কোন ধরণের সহযোগিতা করবেন না এবং দূতাবাসও এর দায়ভার গ্রহণ করবে না। তিনি সকলকে লেবাননের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তা মেনে চলার আহবান জানান।
জেলখানায় বন্দী প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছোট বড় অপরাধ বা বিনা অপরাধে এবং হয়ত কারো সাজা হয়ে গেছে এমন প্রবাসীদেরকে মুক্তি দেয়ার জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে কারা কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়েছে, সেটাও ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। তিনি সবাইকে শান্ত থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহবান জানান।
পাশাপাশি তিনি যে কোন ধরণের গুজব না ছড়াতে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ করেন। তিনি যে কোন সমস্যায় প্রবাসীদের দূতাবাসে যোগাযোগ করারও অনুরোধ জানান।