বগুড়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে সাইদুজ্জামান সরকার তারা (৭০) নামে আরও এক প্রবীণ সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ছাড়া শুক্রবার রাত ১২টার দিকে একই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) করোনায় এক পোশাক কর্মীর মৃত্যু হয়। তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।
প্রবীণ সাংবাদিক সাইদুজ্জামান সরকার বগুড়া থেকে ১৯৭২ সালে প্রথম প্রকাশিত ‘দৈনিক বাংলাদেশ’ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। সর্বশেষ তিনি বগুড়া থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক হাতিয়ার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এবং বগুড়া প্রেসক্লাব ও বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রবীণ সদস্য ছিলেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখযোদ্ধা সাইদুজ্জামান সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের সূত্রাপুর এলাকায় বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার ডেমাজানি ইউনিয়নের মালোপাড়া গ্রামে।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিক সাইদুজ্জামান সরকারকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়। তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য গতকাল শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় ল্যাব থেকে আসা প্রতিবেদনে তিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যুতে বগুড়া প্রেসক্লাব ও বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে। শোকের ছায়া নেমে এসেছে বগুড়ার সাংবাদিক মহলে। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় আজ শনিবার সকালে গার্ড অব অনার ও জানাজা শেষে সাইদুজ্জামান সরকারের মৃতদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বগুড়ায় আরও দুই সাংবাদিকের মুত্যু হয়। এদিকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে মৃত্যু হয় মুজাহিদুল ইসলাম (৪৫) নামের এক রোগীর। তার বাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি এলাকায়।
হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়ে ২০ জুন মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি হন মুজাহিদুল। কাশির সঙ্গে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় গতকাল তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা চলছিল। পরে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ২ হাজার ৬০২ জন। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৭ জনের।