সাড়ে চার দশক আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে জড়িত আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্তকৃত) আব্দুল মাজেদ বিগত দুই দশক পালিয়ে ভারত গিয়েছিলেন। মার্চের মাঝামাঝি সময় তিনি ঢাকায় আসেন। ঢাকার মিরপুর থেকেই ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যদের হাতে সোমবার দিনগত রাতে ধরা পড়েন তিনি।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান। এদিন আদালতের কার্যক্রম শুরুর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরনের কাছে মাজেদ নিজেই একথা জানান।
বিকেলে অ্যাডভোকেট হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, আদালতের কার্যক্রম শুরুর আগে অমি ক্যাপ্টেন মাজেদের কাছে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি এতোদিন কোথায় ছিলেন? জবাবে তিনি জানিয়েছেন, বিগত ২০ থেকে ২২ বছর ভারতের কলকাতায় ছিলেন। সেখান থেকে ১৫ বা ১৬ মার্চ ঢাকায় আসেন তিনি।
তবে হঠাৎ কেন ঢাকায় এলেন মাজেদ এবং এ কয়দিন কোথায় ছিলেন, সে বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হয়নি। আইনজীবী হিরন বলেন, বিচারক এজলাসে উঠার আগে দু’এক মিনিটে তার সঙ্গে এতোকুই কথা হয়েছে। এটা অনানুষ্ঠানিক কথা, ব্যক্তিগত কৌতুহল থেকেই আমি এটা জিজ্ঞাসা করি। অন্য কোনো কারণে নয়।
সোমবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে মিরপুর এলাকা থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট মাজেদকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম সূত্র জানায়, মাজেদ বাংলাদেশে ঢোকার পরপরই ইন্টারপোলের মাধ্যমে তারা সেটি জানতে পারেন। সেই তথ্য অনুযায়ী, তাকে ট্র্যাক করে গ্রেফতারের তৎপরতায় ছিলো পুলিশ। শেষ পর্যন্ত গত রাতে তারা মাজেদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।
মাজেদ গ্রেফতার হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরও পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। এরা হলেন- মোসলেম উদ্দিন, শরিফুল হক ডালিম, খন্দকার আবদুর রশীদ, এ এম রাশেদ চৌধুরী এবং এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল তরুণ অফিসারের হাতে সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকার্য দীর্ঘদিন বিলম্বিত হবার পর অবশেষে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর হয়। পলাতক অবস্থায় একজন মারা যান।
ভিন্নবার্তা/এমএসআই